বাহারি ইফতারিতে পিছিয়ে নেই ফুটপাত
রাজধানীর নিম্ন আয় ও কর্মব্যস্ত মানুষের ইফতারির বড় ভরসা ফুটপাতের খণ্ডকালীন দোকান। অভিজাত হোটেলের মতো দামি ইফতার সামগ্রী না থাকলেও ফুটপাতের এসব দোকানে বাহারি ইফতারির অভাব নেই। বেগুনি, পেঁয়াজু, ছোলার ঘুগনি, মুড়ি, জিলাপি, জালি কাবাব, চিকেন হালিম, গরু ও খাসির হালিম, আলু সমুচা, বিফ সমুচা, আলুর চপ, শাকের চপ, ভেজিটেবল রোলসহ বাহারি ইফতারি অল্প দামেই সংগ্রহ করতে পারেন কর্মব্যস্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

বাণিজ্যিক এলাকা থেকে পাড়া-মহল্লার গলির ফুটপাতেও আছে খণ্ডকালীন ইফতার সামগ্রীর বিক্রেতারা। কোথাও কোথাও সারিবদ্ধভাবে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে ইফতারির দোকান। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে দোকানিরা রাস্তার ওপর সামিয়ানা ঝুলিয়ে টেবিল পেতে বসে পড়েছেন। রাজধানীজুড়ে গড়ে ওঠা এসব ইফতারির দোকানে জোহরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয়ে যায় কর্মব্যস্ততা। দোকানিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন জিলাপি, ছোলার ঘুগনি, বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, ডিমের চপ, জালি কাবাব, হালিম, সমুচা, ভেজিটেবল রোল, ভেজিটেবল চপসহ নানা রকমের ইফতার সামগ্রী বিক্রি করতে। পাড়া-মহল্লা, বাণিজ্যিক এলাকা ও ব্যস্ততম সড়কগুলোর ফুটপাত ঘিরে গড়ে ওঠা ইফতারির দোকানগুলোতে এলাকাভেদে বেগুনি, পেঁয়াজু, সমুচা, আলুর চপ বিক্রি হচ্ছে ৩-৫ টাকা পিস হিসেবে। ডিমের আলুর চপ ১০ থেকে ১৫ টাকা, জালি কাবাব ১০ থেকে ২০ টাকা, ভেজিটেবল রোল ২০ টাকা, জিলাপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা এবং জিলাপির পিস ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মতিঝিলে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসা মো. জিহাদুল বলেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমি এখানে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছি। আমাদের কাছ থেকে সাধারণত বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইফতারি কিনে নিয়ে যায়। ছোলা, মুড়ি, বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, জিলাপি আমাদের কাছ থেকে যে কেউ স্বল্প মূল্যে কিনে নিয়ে যেতে পারেন। আবার কেউ চাইলে এখানে বসেও ইফতারি করতে পারেন। একজন চাইলে ২০-২৫ টাকার মাধ্যমে ভালো ইফতারি করতে পারবেন।
ধলপুরের মো. আক্কাস বলেন, আমরা রোজাদারদের চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী ইফতারি বানাই। বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, হালিম, জিলাপি, সমুচা, ভেজিটেবল রোল, ভেজিটেবল চপ, ঘুগনিসহ ইফতারির প্রায় সব আইটেমই আমাদের কাছে আছে। হোটেলে এসব আইটেমের যে দাম আমরা তা থেকে অনেক কম রাখি। যাত্রাবাড়ী শহীদ ফারুক সড়কের ব্যবসায়ী মো. জাকের আলী বলেন, আমাদের কাছে বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, খুরমা খেজুর, শাকের চপ, হালিম, জিলাপি, সমুচা, ভেজিটেবল রোল, মুড়ি, ছোলার ঘুগনিসহ নানা রকমের ইফতারির খাবার রয়েছে। হালিমের বাটি ৪০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় পাওয়া যাবে।

মতিঝিলের দিলকুশার ইফতারি বিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, অফিসের কাজের জন্য অথবা বিশেষ কোনো কাজে অনেকে আটকা পড়ে যান। ইফতারির নির্ধারিত সময়ে বাসায় পৌঁছতে পারেন না। আবার অনেকে মেসে থাকেন, সেখানে তাদের জন্য ইফতারির আয়োজন করা হয় না। সাধারণত এমন ব্যক্তিরাই ফুটপাতে ইফতার করেন। তারা যাতে অল্প টাকায় ইফতারি করতে পারেন যে চিন্তা করেই আমরা ইফতারির খাবার তৈরি করি। রামপুরা মোল্লাবাড়ি থেকে ইফতার কেনা ফারুক হোসেন বলেন, আমার ছোট বাচ্চা রয়েছে। যে কারণে গৃহিণীর পক্ষে বাসায় ইফতারি বানানো সম্ভব হয় না। তাই এখান থেকে ইফতারি কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
