ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ৮ জুলাই, ২০১৮ ১৫:০৫

‘বিদায়ী মহাসচিবের ভূমিকায় বিএফইউজের নির্বাচন স্থগিত’

অনলাইন ডেস্ক
‘বিদায়ী মহাসচিবের ভূমিকায় বিএফইউজের নির্বাচন স্থগিত’

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) বিদায়ী মহাসচিবের ভূমিকার কারণে গত ৬ জুলাই সংগঠনটির নির্বাচন স্থগিত হয়েছে বলে জলিল-কাজল-মধু পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী দ্রুত বিএফইউজের নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে পরিষদটি। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানানো হয়।

এতে পরিষদটির সভাপতি প্রার্থী আবদুল জলিল ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া কাজল, কোষাধ্যক্ষ মধুসূধন মন্ডল, নির্বাহী সদস্য শেখ মামুনর রশিদ, খায়রুল জামান কামাল, জহিরুল হক টুকু উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাকারিয়া কাজল বলেন, ‘৬ জুলাই (শুক্রবার) বিএফইউজে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারিত ছিল। প্রার্থী হিসেবে আমরা আমাদের সকল প্রচারণা-প্রস্তুতি শেষ করে যখন চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, তখন নির্বাচন কমিশন আমাদের জানায় শ্রম আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে তারা নির্বাচন করতে অক্ষম।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অনু্ষ্ঠানের আগের দিন ৫ জুলাই নির্বাচন কমিশন সকল প্রার্থীদের সভা ডাকেন। সভায় উপস্থিত হয়ে আমরা জানতে পারি দুইজন প্রার্থীর এক মামলায় প্রথম শ্রম আদালত নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রার্থীদের কাছে করণীয় জানতে চাইলে প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি, সহ-সভাপতি, মহাসচিব ও কোষাধ্যক্ষরা নির্বাচন অনুষ্ঠানে লিখিতভাবে সম্মতি দেন।

‘এ পর্যায়ে নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে শ্রম অধিদফতর নির্বাচন কমিশনকে স্থগিত করে দিয়ে ডিইউজে ভোটারদের নির্বাচনে অংশ গ্রহণের নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক নির্বাচন কমিশন ডিইউজের কাছে পূর্ণ ভোটার তালিকা চেয়ে চিঠি দেয় এবং ডিইউজে তালিকা নির্বাচন কমিশনকে প্রদান করে,’ বলেন জাকারিয়া কাজল।

তিনি বলেন, ‘বিএফইউজে সম্পূর্ণ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে ডিইউজের কিছু সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করে এবং কারও কারও ভোটাধিকার স্থগিত করে। গত বৃহস্পতিবারের (৫ জুলাই) সভায় স্থগিত করা ভোটারদের ভোটাধিকার প্রদান নিয়ে বিদায়ী মহাসচিব আপত্তি করেন। ডিইউজের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের ভোটর তালিকা অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।’

‘এ পর্যায়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইনগত বিষয়ে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে আমাদের সদস্যদের ভোটাধিকার ও সার্বিক স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনে আমাদের প্যানেল আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে’ -বলেন জাকারিয়া কাজল।

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর বিএফইউজের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও কোনো এক রহস্যজনক কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। অনেক সদস্যের ধারণা, যাদের স্বার্থে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, সেই একই স্বার্থে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা করা হচ্ছে।’

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আবদুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা ডিউজের সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী ভোট চাই। নির্বাচন কমিশনও এটা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু বিদায়ী মহাসচিবের আপত্তির কারণে নির্বাচন কমিশন বেঁকে বসেন। তখন কমিশন বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনায় যেহেতু নির্বাচন স্থগিত হয়েছে, তাই নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন কে বিগত দিনে কল্যাণ ফান্ডের টাকা খরচ করে ফেলেছেন। পত্রিকায় রেড কার্ড দেয়ার নামে বাণিজ্য করেছেন। এটা কে করেছেন- সেটা সাংবাদিকরা সবই জানেন। আমি নাম বলতে চাই না।’

আব্দুল জলিলের অভিযোগ, বিদায়ী কমিটির মহাসচিবের অবহেলা অথবা ইচ্ছাকৃত ভুলের কারণে বিএফইউজের নির্বাচন ঝুলে গেছে। এই ভুল ইচ্ছাকৃতই হোক অথবা অবহেলার কারণেই হোক দুটিই অপরাধ। এছাড়া ট্রেড ইউনিয়নের নির্বাচনে শ্রম অধিদফতরের একজন প্রতিনিধি নির্বাচন কমিশনে রাখার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এবার বিএফইউজের নির্বাচন কমিশনে শ্রম অধিদফতরের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়ন মুনাফার জায়গা নয়, বিনিয়োগের জায়গাও নয়। এটা আমাদের রুটি-রুজির স্থান। এখানে কেন বিনিয়োগ করা হবে। যারা এখানে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করছেন, তারা নিশ্চয় তাদের সেই অর্থ উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন।’

নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পেছনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ কি না? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না পরিস্থিতির আরও অবনমন হোক। আমরা এই নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে চাই।’

সঠিক সময়ে বিএফইউজের নির্বাচন না হওয়ার কারণ হিসেবে সংগঠনটির কোষাধ্যক্ষ মধুসূদন মন্ডল বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সঠিক সময়ে বিএফইউজের নির্বাচনের জন্য জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন হয়েছে। আমি কমিটিতে থাকার পরও সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। কিন্তু আমাদের কিছু নেতা ক্ষমতার লিপ্সায় অবৈধভাবে নির্বাচন পিছিয়েছে।’

উপরে