খিলক্ষেতে বিআরটিসি’র ডিপোতে তালা, বাস বন্ধ
১০ মাসের বেতন বাকি থাকায় রাজধানীর খিলক্ষেত জোয়ারসাহারা বিআরটিসি বাস ডিপোতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছে বিআরটিসি বাসের চালক ও তাদের সহকারীরা। এজন্য বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে ডিপো ছেড়ে যায়নি কোনো বাস। বৃষ্টির মধ্যেই ডিপোর ভেতরে ঢুকে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা। বেতদের দাবিতে ডিপোর সামনে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
এই ডিপোতে মতিঝিল-আব্দুল্লাহপুর রুটের বিআরটিসির শতাধিক দোতলা ও এসি বাস থাকে। রাজধানীতে বিআরটিসির ছয়টির ডিপোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য ডিপো জোয়ারসাহারা।
শ্রমিকরা জানায়, বকেয়া বেতন পরিশোধ না করা পর্যন্ত তারা তালা খুলবেন না এবং রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামবেন না।
শরীফ মোল্লা নামে এক শ্রমিক জানান, ‘চলতি মাস হিসাব করলে আমরা দশ মাস ধরে বেতন পাই না। আমরা বেশ কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছি কিন্তু কোনো কাজ না হওয়ায় আজ ডিপো অবরোধ করে রেখেছি।’ প্রায় চার শ চালক শ্রমিক আন্দোলনে নেমেছে বলে জানা গেছে।
কালাম নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘আন্দোলনের একটাই কারণ সেটা হলো আমাদের দশ মাসের বেতন বাকি। এতো দিন কেন বাকি সেটাও জানি না। আমরা আজকের মধ্যে দশ মাসের বেতন চাই। আর আমাদের ডিউটি সরকার বলেছে পাঁচ ঘন্টা কিন্তু সেখানে ২০ ঘন্টাও ডিউটি করি বেতনের জন্য; এরপরও আমরা বেতন পাই না। চেয়ারম্যান, ম্যানেজার আমাদের নিয়ে হেস্তনেস্ত করছে বেতন না দিয়ে। ডিউটি যদি একদিন কম হয় সেটা অনুপস্থিত দেখায়। বেতন ছাড়া আমরা কিভাবে চলবো। সব জায়গায় বাকি হয়ে আছে। এখন মরা লাগবে মনে হচ্ছে।’
তিনি জানান, ‘এই ডিপোতে শ্রমিক আছে প্রায় সাড়ে চার শ। জোয়ারসাহারা ডিপোর মতো দেশের ২৭টি বিআরটিসি ডিপোর ১৭টির একই অবস্থা। কোথাও ১৩ মাস কোথাও সাত মাসের বেতন বাকি শ্রমিকদের।’
বিআরটিসির মতিঝিল প্রধান কার্যালয় সূত্র জানায়, জোয়ারসাহারা বিআরটিসি বাস ডিপো থেকে ডিপো ম্যানেজার মনিরুজ্জমানকে সরিয়ে গাজীপুর ডাম্পিং ডিপোতে পাঠিানো হয়েছে। আর নতুন ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করবেন নূর আলম মামুন। তিনি বর্তমানে বিআরটিসি সচিব হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন।
জানতে চাইলে জোয়ারসাহারা বিআরটিসি বাস ডিপোর নতুন দায়িত্ব নেওয়া ম্যানেজার নুর-ই-আলম ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘আমাকে এখানে কেবল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনও দায়িত্ব বুঝে নেইনি। আগের ম্যানেজারের কারণে আজ বিক্ষোভ ও অবরোধ চলছে। এর দায় তো আর আমি নেব না। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বেতন না দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করবে না। যাত্রীর হয়রাণির বিষয়টি মাথায় রেখে আশা করি শুক্রবার তাদের বেতন দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হবে। কারণ এটা তো একটি নিয়মের মধ্যে দিতে হবে। আমার হাতে তো আর আলাদিনের চেরাগ নেই।’
