যশোরে রফিকুল হত্যা: অস্ত্রসহ পাঁচজন আটক
যশোরের মণিরামপুরে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সদস্য রফিকুল ইসলাম (৫৫) হত্যা মামলার ৫ সন্দিগ্ধ আসামিকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। হত্যা কাজে ব্যবহৃত দুই রাউন্ড কার্তুজসহ একটি একনালা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রকৌশলী দেলোয়ার হত্যার সুষ্ঠ বিচারের দাবি স্ত্রীর
শুক্রবার দিবাগত রাতে কোতয়ালি, মণিরামপুর ও অভনগর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন হেলাল ভূঁইয়া (২০), মোহাম্মদ সেলিম (২২), হাসান আলী, সমীরণ পাঁড়ে (৫৪) ও তাপস মোড়ল (৩৮)।
শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন আটক এবং অস্ত্র উদ্ধার সম্পর্কে নানা তথ্য দেন।
গত ৯ জুলাই দুপুরে সন্ত্রাসীরা বর্তমানে ইজিবাইক চালক রফিকুলকে মণিরামপুরের কুচলিয়া গ্রামের কল্যাণের মাছের ঘেরের পাশে টাকা দেয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শিরিনা আক্তার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মণিরামপুর থানায় মামলা করেন।
পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন বলেছেন, মামলাটি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক হওয়ায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, কোতয়ালী, অভয়নগর ও মণিরামপুর থানা যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানে পাঁচজনকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি দো-নলা বন্দুক, দুই রাউন্ড কার্তুজ ও তাদের ব্যববহৃত পাঁচটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। সমীরণ পাড়ের বাড়ির একটি গর্তের মধ্যে থেকে ওই অস্ত্র উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়েছে। এর আগে হাদিউজ্জামান রানা (৪৪) নামে আরো একজনকে আটক করা হয়েছিলো। রানা মণিরামপুরের বাহাদুরপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, আটককৃতরা নিজেদের চরমপন্থী সংগঠন ‘নিউ পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি’র সদস্য পরিচয় দিয়ে এলাকায় ঘের দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছে। নিহত রফিকও এক সময় তাদের সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধেও অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকাশ দত্ত হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা আছে। ঘটনার দিন তাকে টাকা ও মোবাইল ফোন দেয়ার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে ঘটনাস্থলে ডেকে গুলি করে ও গলা কেটে হত্যা করে সহযোগিরা। আটক ৫ জনের মধ্যে সমিরণ নিহত রফিকুলের সাথে চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি।
ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মদ জানিয়েছেন, আটক পাঁচজন আদালতে বিকেলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
পুলিশ সুপার আরো জানিয়েছেন, যশোরে ১০ জনের একটি গ্রুপ আছে যারা বিভিন্ন চরমপস্থী দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, ঘের দখল, হত্যাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে বেড়ায়। পুলিশ তাদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা করছে। রফিকুল হত্যা মামলার আসামিরা মূলত সন্ত্রাসী গ্রুপ। পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির পরিচয়ে তারা পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এই গ্রুপের মূল হোতার নাম আসাদ। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম, সালাহউদ্দিন শিকদার, ডিবি পুলিশের ইনসপেক্টর মারুফ আহমেদ, রফিকুল হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মণিরামপুর থানার ওসি সিকদার মতিয়ার রহমানসহ পুলিশ অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই দুপুরে মণিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া এলাকায় হত্যা করা হয় রফিকুল ইসলামকে। তিনি একই উপজেলার মধুপুর গ্রামের আমারত বিশ্বাসের ছেলে।
