ঢাকা, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৮:২৮

মুক্তিযোদ্ধাকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধর, জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় সমঝোতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযোদ্ধাকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধর, জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় সমঝোতা


মার খাওয়ার পরও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ক্ষমা করে দিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী। সোমবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মাফ চাওয়ার পর ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে।

জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর ইসাহাক আলীর স্ত্রী পারুল বেগমকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তবে ইসাহাক আলীর দাবি, বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন তার স্ত্রী। চিকিৎসকদের ডাকলেও কেউ আসেননি। এ সময় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। 

পরে চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রাকিবুল ইসলামকে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বিকেলে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাকিবুল মায়ের দাফনের কাজে অংশ নেন। 
হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলীকেও মারধর করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ছেলের সামনেই বুকে-পিঠে লাথি মারা হয় তার।  
এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এই কমিটি প্রত্যাখান করে শনিবার মানববন্ধন করেন রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ইসাহাক আলী দুই ইন্টার্নসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। 
রবিবার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। এদিন মুক্তিযোদ্ধারাও জেলা প্রশাসকে একটি স্মারকলিপি দেন।
এরপর সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী সার্কিট হাউসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বসেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। সেখানে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলীও ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসক শোভন সাহা ও আবদুর রহিম মুক্তিযোদ্ধার কাছে ক্ষমা চান।
এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নগরীর রেলগেট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. আবদুল মান্নান বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দিলেন জেলা প্রশাসক। সেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ক্ষমা চেয়েছেন। 
মামলার বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা বলেছি মামলা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে পারব না। তখন প্রশাসন বলেছে, মামলা তারা দেখবেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, কবিকুঞ্জের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, রবিউল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপরে