ঢাকা, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ১৩ অক্টোবর, ২০২০ ১৭:১২

বালিয়াকান্দিতে আগাম ফুলকপি চাষে ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
বালিয়াকান্দিতে আগাম ফুলকপি চাষে ব্যাপক ক্ষতি


রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নটাপাড়া গ্রামের দুই বন্ধু মো. হাসিব ও সৈকত। এ বছর লাভের আশায় আগাম ফুলকপি চাষে নেমেছিলেন তারা। প্রায় দুই মাস আগে ৩০ শতাংশ জমিতে চাষ শুরু করে ফুলকপির। চারা রোপণের পর বেশ সতেজ হয়ে উঠেছিলো গাছগুলো। স্বপ্ন দেখছিলো ৬০ হাজার টাকা লাভের। এখন থেকে গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু অসময়ে অতিবৃষ্টি ও রোদে তাদের জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর বালিয়াকান্দিতে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ করা হয়। প্রতি বছর এই সময় প্রতি কেজি ফুলকফি ৭০-৮০টাকা দরে বিক্রি করা হয়। 
সৈকত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ফুলকপির চাষ শুরু করি। আশা করেছিলাম ৬০ হাজার টাকার মতো আয় হবে। কিন্তু গত সপ্তাহের অতিবৃষ্টিতে জমির অধিকাংশ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আগাম ফুলকপিতে এক টাকাও উঠবে না বলে জানান সৈকত। 
জামালপুর ইউনিয়নের একাধিক ফুলকপি চাষি বলেন, অসময়ের বৃষ্টিতে তারা আগাম ফুলকপি চাষে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে জামালাপুর ইউনিয়নের আগাম ফুলকপির দুই তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে কোন কর্মকর্তা মাঠে না আসায় ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফুলকপি চাষিরা।
গুপ্তলক্ষনদীয়া গ্রামের কৃষক দেলোয়ার শেখ বলেন, প্রতি বছর এই সময় আগাম ফুলকপি বিক্রি করি। কিন্তু এ বছর দুই একর জমিতে ফুলকফি চাষ করেছিলাম। সবগুলো গাছ অতিবৃষ্টিতে পচন রোগে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আবার নতুন করে চাষ শুরু করেছি। কপিগুলো নষ্ট না হলে তিন লক্ষ টাকা বিক্রি করা যেত, কিন্তু বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে। যে কারণে এ বছর বাজারে আগাম শীতের সবজি অনেক কম এবং দাম বেশি।
মো. মিজানুর রহমান নামের আরেক কৃষক বলেন, এ বছর অতিবৃষ্টি আর রোদে ফুলকপিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। কৃষি বিভাগ থেকে কোন সহায়তা কিংবা পরামর্শ পাওয়া যায়নি। নতুন করে চাষ শুরু করতে হলে অনেক কৃষককে ধার-দেনা হয়ে চাষ শুরু করতে হবে। কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ না পাওয়ার অভিযোগ করেন ফুলকপি চাষি মিজান।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং মাটিতে রস থাকার কারণে ফুলকপি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ফাঙ্গাস রোগের আক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। জনবল সংকটের কারণে কাঙ্খিত সেবা দেওয়া ব্যহত হচ্ছে। তবে অল্প সংখ্যক লোকবল দিয়ে প্রতিটা ব্লকের কৃষকদের পরামর্শ প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। বৃষ্টিপাত হ্রাস পেলে আবার কৃষকেরা মুখে হাসি ফুটবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে ফুলকপি চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা যেন কৃষি ঋণ পায় আগামী সভায় সেটি নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং কৃষকদের কৃষি ঋণ বিতরণ করা হবে।

উপরে