ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ১১:৪২

বিএনপি’র বিরুদ্ধে বাসে অগ্নিসংযোগের তথ্য-প্রমাণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি’র বিরুদ্ধে বাসে অগ্নিসংযোগের তথ্য-প্রমাণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী


জাতীয় সংসদে বিএনপি’র বিরুদ্ধে বাসে অগ্নিসংযোগের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীতে বাসে অগ্নিসংযোগের পর বিএনপি’র অডিও রেকর্ড শুনিয়ে তিনি বলেছেন, আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা নিজেরাই আগুন দিয়ে আমাদের সরকারকে দুর্নামের ভাগীদার করবো কেন?
সোমবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপি সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ রাজধানীতে সম্প্রতি ১১টি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপি’র বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীদের আনা অভিযোগ সত্য বলে দাবি করেন। এসময় তিনি সংসদীয় কমিটি গঠনেরও দাবি জানান। 
এর জবাবে সংসদে ফ্লোর নেন প্রধানমন্ত্রী। অধিবেশন মুলতবি ঘোষণার আগ মুহূর্তে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌‘আমি উঠতে চাইনি। কিন্তু মাননীয় সংসদ সদস্য যেভাবে কথাগুলো বললেন তা ঠিক নয়। আমার কাছে একটা রেকর্ড আছে, আমি তা এই সংসদে শোনাতে চাই। টেকনোলজি অনেক এগিয়ে গেছে। এখন মানুষকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বিএনপি নেতা ও এক নেত্রীর গাড়ি পোড়ানো সংক্রান্ত কথোপকথন পুরোটাই শোনান। যা সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর বিএনপি দলীয় এমপি মো. হারুনুর রশীদকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এমপিকে আমার সংসদের সামনের সিটে বসিয়েছি কথা বলার জন্য। কিন্তু উনি বিভিন্ন সময় এমন এমন কথা তোলেন, সব সময় আমরা কথার উত্তর দেই না। কিন্তু আজকে তিনি যে কথাগুলো বললেন- এ সম্পর্কে তার দলের তথ্য নিয়ে কথা বলা উচিত ছিল।
হারুনুর রশীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উনি নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আদৌ তারা নির্বাচন করে কি না? নির্বাচনে তারা অংশ নেন, মনোনয়ন নিচ্ছেন আর যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনে কোন এজেন্ট দেন না। একটা সময় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে বলেন, নির্বাচন ঠিক হচ্ছে না। আসলে জনগণের সমর্থন হারিয়েছেন তারা অনেক আগেই। ২০০১ সালে চক্রান্ত করে ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাস, মানুষ খুন করা, নারী নির্যাতন থেকে শুরু করে সকল প্রকার নির্যাতন করেছে বিএনপি। হাজার হাজার মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করানো অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষ পোড়ানোই তাদের আন্দোলন। 
তিনি বলেন, এখন তো টেকনোলজির দিন। সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে। হাতে-নাতে ধরা পড়ে যাচ্ছে। কারা কারা সত্যিকারে আগুন দিচ্ছে- এগুলো একদম পরিষ্কার। কারণ আমার কাছে ছবি আছে। সংসদে ছবি দেখানোর সুযোগ থাকলে আমি ছবি দেখাতে পারতাম। কয়েকজন মিছিল থেকে বেরিয়েই বাসে আগুন দিচ্ছে সেই ছবি আমার কাছে আছে। রাস্তার সিসি ক্যামেরা থেকে সেগুলো নেওয়া। সুতরাং আগুন দিয়ে সংসদে এসে সরকারের ওপর দোষারোপ করা- এটা তাদের অভ্যাস।
বিএনপির উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, এটা তাদের গোড়ায় গলদ। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেছে হত্যা-ষড়যন্ত্র করে। তার ক্ষমতা দখলটাই হচ্ছে খুনের মধ্যে দিয়ে। সে খুনের রাজনীতি, সন্ত্রাসের রাজনীতি ভালো বুঝো। দুর্নীতি করা, অর্থ পাচার করা, নানা ধরনের অপকর্ম তারা করে গেছে। কোন কারণ নেই বাসে আগুন দিয়ে পোড়ানো। কিন্তু তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এটা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নেতা বানিয়েছে কাকে? খুনের মামলার আসামি, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি, যে দেশ থেকে পলাতক- তাকে বানানের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দেশে কি এমন কোনো যোগ্য নেতা নেই, যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হতে পারেন? ফেরারি খুনের আসামি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাদের নেত্রী এতিমের টাকা আত্মসাৎ করা সাজাপ্রাপ্ত। কিন্তু তবুও তাকে বাসায় থাকতে দেওয়া হয়েছে।
সংসদে অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত না করার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সাথে সাথে মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধেরও অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উপরে