ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৭:৩৫

আলপনা ও বর্ণমালায় সেজে উঠছে শহীদ মিনার এলাকা

অনলাইন ডেস্ক
আলপনা ও বর্ণমালায় সেজে উঠছে শহীদ মিনার এলাকা

একদিকে বাংলা বর্ণমালা, অন্যদিকে আলপনা এমন অসংখ্য লেখা দেখা মিলছে কেদ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশের দেয়ালগুলোতে। কেউ ভাষা শহীদের ছবি আঁকছেন আবার কেউ বাংলা বর্ণমালা লিখছেন। লিখছেন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ প্রভাতফেরির এমন বিখ্যাত গানও।

ভাষার মাসে একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে অসংখ্য চিত্রকর্ম চোখে পড়ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায়।এছাড়াও নিরাপত্তার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন পুলিশ ও র‍্যাবের দুইটি বিশেষ টিম।

পরিষ্কার-পরিছন্নতায় ব্যস্ত এক কর্মী।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ধোয়ামোছা ও রঙ করার কাজের তদারকি কর্মকর্তা মো. নূরু মিয়া ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘১ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ৩৫ জন শহীদ মিনারের পরিষ্কার-পরিছন্নতার কাজ করছেন। কেউ কেউ পেইন্টিং করছেন। আশা করছি আগামীকালের মধ্যে আমরা সবকাজ সম্পূর্ণ করতে পারবো। আমাদের কাজ শেষ হলে চারুকলার চিত্রশিল্পীরা মাঠে আলপনা আঁকবেন।’

এদিকে গত ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম ও র‍্যাবের একটি বিশেষ টিম নিরাপত্তার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় কাজ করে যাচ্ছে। পলাশী মোড় থেকে হাইকোর্ট মোড় পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১২৫টির মতো সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে বলে কাজে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

শহীদের স্মরণে দেয়াল লিখন। 

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সার্বিক নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানা গেছে।

সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্যান্য বছরের মতো ঐতিহ্য বজায় রেখে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ভাষা দিবস কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পালিত হবে। আমি একটা বার্তা সবাইকে দিতে চাই, আমরা আগেও বলেছি। নো মাস্ক নো এন্ট্রি। মাস্ক ছাড়া কেউও প্রবেশ করতে পারবে না। এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি সংগঠনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে দুইজন শহীদ মিনারে প্রবেশ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন।’ এছাড়াও শহীদ মিনারে যারা শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান তিনি।

নিরাপত্তার জন্য ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে।

কেদ্রীয় শহীদ মিনার পরিষ্কার ও পরিছন্নতার উপকমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক হুমায়ুন আক্তার দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা শহীদ মিনার এলাকার চারপাশ ঘুরে দেখলাম খুব সুন্দরভাবে পরিষ্কার-পরিছন্নতার কাজ চলছে। অন্যান্য বছরে যেমন রাস্তা নির্মাণের কাজ চলে এবার সেটি নেই। তাই এবার আশেপাশের সৌন্দর্য বেড়েছে অনেকেটা। আশা করি সুষ্ঠুভাবে দিবসটি উদযাপিত হবে।

শহীদ মিনার কেন্দ্রীক ট্রফিক ব্যবস্থাপনার নিদের্শনা।

একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের খসড়া কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। শহীদ মিনারের সব প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখতে হবে। মাস্ক পরা ছাড়া কাউকে শহীদ মিনার চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শহীদ মিনার চত্বরে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক স্কাউট, গার্লস গাইড ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। তাদের কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক সরবরাহ করতে হবে; যাতে শহীদ মিনারে আসা জনসাধারণ হ্যান্ড স্যানিটাইজ ব্যবহার করে শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে পারেন।

সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের কাজে ব্যস্ত এক র‌্যাব সদস্য। ছবি: ইত্তেফাক

কেউ মাস্ক না নিয়ে আসলে তাদেরকে মাস্ক সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। একুশে ফেব্রুয়ারি রাতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা, যাতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ঐতিহ্য বজায় রেখে শহীদ মিনারে উপস্থিত হতে পারেন। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কখন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন, সেই বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং এসএসএফ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে খসড়া কর্মসূচিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিভিন্ন ভিআইপি ব্যক্তিরা, ঢাকার বিদেশি দূতাবাসের প্রতিনিধিরা, একুশে উদযাপন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দফতর, সংস্থার প্রতিনিধিদের ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের ধারাক্রম নির্ধারণ করে এবং মিশন প্রধানদের তালিকা প্রণয়ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরবরাহ করতে হবে।

উপরে