নদীমাতৃক দেশের নদীগুলো আবার খরস্রোতা করার জন্য ২৪ হাজার কিলোমিটার ড্রেজিং করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। সরকারের ২০২১ ও ২০৪১ সালের ভিশনের আলোকে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৫৬তম বৈঠক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ওপর বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
কার্যপত্র থেকে জানা যায়, বৈঠকে বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর মোজাম্মেল পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ১৪’শ কিলোমিটার নৌপথ ড্রেজিং করা হয়েছে। দেশের ৩টি নৌবন্দরের সঙ্গে নৌপথের যোগাযোগ বাড়ানো হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিনগুণ ড্রেজিং করা হচ্ছে।
বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজারের সংখ্যা ২১টি। এর সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫ করা হবে। ঢাকার সদরঘাটে আরও ৪টি টার্মিনাল হবে। এছাড়া চাঁদপুর, বরিশাল এবং নারায়ণগঞ্জে টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। দেশের ২৯টি নদীবন্দরে কার্গো টার্মিনাল হবে। এ বন্দরগুলো চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। ২০২১ সালের মধ্যে এ কার্গো টার্মিনাল নির্মিত হবে।
তিনি আরও জানান, বিআইডব্লিউটিএ বহরে ১১২টি জাহাজ যুক্ত হয়েছে। দুই ফেজে আরও ২০টি ড্রেজার ও ৯২টি জাহাজ নির্মাণ করা হবে।
এদিকে সংসদের গণসংযোগ অধিশাখা থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসিকে সমন্বয় করে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াতের প্রয়োজনীয় নেয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।
মোংলা বন্দরের কার্যক্রমে নিরাপত্তা জোরদার করতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) অন্তর্ভুক্ত করতে বৈঠকে সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে ভবিষ্যতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সহায়ক যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং নির্মাণকাজে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলসের (পিপিআর) আলোকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞ কোম্পানিকে কার্যাদেশ দেয়ার পরামর্শ প্রদান করা হয়।
বৈঠকে উল্লেখ করা হয়, পদ্মা সেতুর সঙ্গে মোংলা বন্দরে উন্নত যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ঢাকা-মাওয়া-গোপালগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান আছে।
কমিটি সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, মো. আব্দুল হাই, এম আব্দুল লতিফ, রণজিত কুমার রায়, মো. আনোয়ারুল আজীম (আনার) এবং মমতাজ বেগম অ্যাড্ভোকেট অংশ নেন।
বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বিআইডব্লিউটিএ ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।