logo
আপডেট : ২০ জুলাই, ২০২০ ১৭:১৩
ঈদের আগেই সরকারি চাকরিজীবীদের ‘কড়া বার্তা’
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের আগেই সরকারি চাকরিজীবীদের ‘কড়া বার্তা’


মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির গোটা বিশ্ব, বিপর্যস্ত অর্থনীতি। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। অর্থনীতির টালমাতাল অবস্থা সামাল দিতে সরকারি ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ হিসাবে এবার সরকারি চাকরিজীবীদের ভ্রমণ ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঈদের ছুটি নিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের বিরাট দুঃসংবাদ
জানা যায়, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রতি অর্থবছর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ বাবদ বরাদ্দ রাখা হয় দুই হাজার কোটি টাকা। এ অর্থ অনেক সময় অনেক প্রতিষ্ঠান যৌক্তিকভাবে খরচ করতে পারে না। সেজন্য কোনো এক ছুতোয় সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করেন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু চলতি (২০২০-২১) অর্থবছর সেটি আর হচ্ছে না। কারণ সরকার এ অর্থবছর রুটিন ভ্রমণ পরিহারের নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে অপরিহার্য ক্ষেত্রেও সব ধরনের (দেশ-বিদেশ) ভ্রমণ ব্যয় অর্ধেক দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ-২ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেট ভ্রমণ ব্যয় কমানো সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে সীমিত সম্পদেও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেট’ খাতে বরাদ্দ অর্থ ব্যয়ে সরকার কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যার মধ‌্যে রয়েছে, শুধুমাত্র জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় করা যাবে, সরকারি ভ্রমণের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে বরাদ্দ অর্থেও ৫০ শতাংশ বরাদ্দ স্থগিত থাকবে, সব ধরনের রুটিন ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে থমকে গেছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। এর থাবায় দেশের রাজস্ব আহরণেও বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিপরীতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যয় বেড়ে গেছে সরকারের। সরকার ব্যয় নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নতুন গাড়ি কেনায় সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছর বাস্তবায়নাধীন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় নিম্ন অগ্রাধিকার বা কম গুরুত্বপূর্ণ এবং মধ্যম অগ্রাধিকারের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ খরচ বন্ধেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ধারাবাহিকতায় এবার রুটিন বিদেশ ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলো।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, রাজস্ব আদায়ের বর্তমান অবস্থা খুবই করুণ। সদ্য সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে (সংশোধিত) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল, তার চেয়ে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা কম আহরিত হবে বলে জানা গেছে। তাই বাধ্য হয়ে ব্যয় নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ বাবদ বরাদ্দ একত্র করে দেখা গেছে, এর পরিমাণ প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এক্ষেত্রে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে প্রায় অর্ধেক বা তারও বেশি অর্থাৎ এক হাজার কোটি টাকারও বেশি সাশ্রয় করা সম্ভব।


প্রকাশক/সম্পাদক: আবুল হারিস রিকাবদার
প্রকাশক ও সম্পাদক কর্তৃক প্রথম বাংলাদেশ/শিবপুর, নরসিংদী থেকে প্রকাশিত
ফোনঃ বার্তা-০১৭০০-০০০০০০, বিজ্ঞাপন-০১৯০০-০০০০০০, ই-মেইলঃ prothombangladeshnews@gmail.com