ভিসা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির ছবি তুলতে শুরু করেছিলেন পর্যটক। তাতে সমস্যা আরও বাড়ল। সঙ্গে জুড়ে গেল মদ্যপানের অভিযোগও।
দুবাই বিমানবন্দরে নেমে এক ব্রিটিশ নারী তার চার বছরের মেয়েকে নিয়ে দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।
বিমানবন্দর কর্মী তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি মদ্যপান করেছিলেন কি না। তিনি উত্তরে বলেন, দুবাইয়েরই বিমান সংস্থার বিমানে ‘কমপ্লিমেন্টারি ওয়াইন’ দেয়া হয়েছিল। তিনি সেটাই পান করেছিলেন। তারপরেই মা-মেয়েকে তিন দিন আটক করে রাখা হয়।
অভিযোগ, ডিটেনশন সেন্টারের সেই নোংরা ঘরে ঠিক মতো খাবার বা পানীয় জলও দেয়া হয়নি। এমনকি ওই নারীকে শৌচাগার পরিষ্কার করতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি করেছে ‘ডিটেইনড ইন দুবাই’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
পেশায় দন্তচিকিৎসক, ৪৪ বছর বয়সী এলি হলম্যান ইংল্যান্ডে কেন্টের বাসিন্দা। দিন পাঁচেকের ছুটি কাটাতে মেয়েকে নিয়ে ১৩ জুলাই এমিরেটস-এর বিমানে দুবাই আসেন।
অভিযোগ, বিমানবন্দরে পা রাখতে না রাখতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এক অভিবাসন কর্মকর্তা। জানান, এলির ভিসাটি অবৈধ। লন্ডনে ফিরে যেতে হবে তাকে। ভদ্রলোক অত্যন্ত অভদ্র আচরণ করছিলেন বলে এলির অভিযোগ। তিনি ঘটনার ছবি তুলে রাখছিলেন। নতুন ভিসা নিতে পারবেন কি না জানতে চাইতেই কর্মকর্তা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘আপনি কি বিমানে মদ্যপান করেছিলেন?’ এলির উত্তর শোনা মাত্র মেয়েসহ আটক করা হয় তাকে। কেড়ে নেয়া হয় পাসপোর্ট এবং ফোন। এলির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে দেয়া এক বয়ানে এলির দাবি, ‘তিন দিন একটি বদ্ধ, অপরিষ্কার ঘরে রাখা হয়েছিল আমাদের। যে খাবার পরিবেশন করা হয় তা মুখে তোলার অযোগ্য। ওই তিন দিন পুরোটাই প্রায় জেগে কাটিয়েছি।’ দুবাইয়ে থাকা বন্ধু-বান্ধবরা দেখা করতে এলে তাদের দেখা করতে দেয়া হয়নি। তিন দিন পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এলি। তবে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে তাকে। তত দিন দুবাই ছেড়ে যাওয়ার উপায় নেই তার।
দুবাইয়ে প্রকাশ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বিমানে মদ্যপান অপরাধ হবে কেন? তাছাড়া বিদেশি পর্যটকদের জন্য যে ছাড়ের কথা শোনা যায়, তারই বা কী হলো?
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা রাধা স্টারলিং দাবি করছেন, ‘পর্যটকদের ক্ষেত্রে মদ্যপান বেআইনি নয় বলে ইচ্ছাকৃত একটা ভুয়া ধারণা তৈরি করেছে আরব আমিরাতের শাসকরা।’
ওয়াকিবহাল শিবিরের মতে, ছাড় পেতে হলে পর্যটকদের বিশেষ অনুমতি লাগে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, তাহলে বিমানে মদ পরিবেশন করা হয় কেন? জেনেশুনে পর্যটকদের টোপ দেয়ার জন্য বিমান সংস্থাকেই দোষ দিচ্ছেন রাধা।