অভিবাসন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত হতে পারছে না হাঙ্গেরি ও ইতালি৷ ইইউ-র আহ্বান সত্ত্বেও আর কোনো অভিবাসীকে স্থান না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এই দুই দেশের নেতারা৷ হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওর্বান এবং ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভানি অভিবাসনবিরোধী নীতিতে একমত৷
এবার সর্ব-ইউরোপীয় অভিবাসনবিরোধী জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন এই দুই নেতা৷ এই জোট আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরোপে শরণার্থীর ঢল ঠেকানোর পক্ষে কাজ করবে৷
মিলানে এক বৈঠক শেষে ইতালির জোট সরকারের শরিক দল লিগ পার্টির প্রধান সালভানি সাংবাদিকদের বলেন, হাঙ্গেরির সাথে মিলে তার দেশ একটি 'জোট গঠনের লক্ষ্যে' কাজ করবে৷ তিনি বলেন, 'এই জোট বামপন্থি ও সমাজতন্ত্রীদের বাদ দিয়ে গঠন করা হবে এবং মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনবে৷ এই মহাদেশে আমরা একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছি'৷
এদিকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সবচেয়ে বড় গ্রুপ ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টিকে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে একটি শক্ত অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ওর্বানের দল ফিদেৎস এই গ্রুপের সঙ্গে আছে৷ ২০১৪ সাল থেকে সালভানির দলও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের চরম ডানপন্থি অংশের সঙ্গে আছে৷
জলে ইতালি, ডাঙায় হাঙ্গেরি
অভিবাসীদের উদ্ধার করে আনা জাহাজ ফিরিয়ে দেয়ায় সালভানিকে 'নায়ক ও চ্যাম্পিয়ন' বলে উল্লেখ করেছেন ওর্বান৷ ইউরোপের নিরাপত্তার জন্যই এমন ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন ওর্বান৷
তিনি বলেন, 'হাঙ্গেরি প্রমাণ করেছে অভিবাসীদের ভূমিতে আটকানো সম্ভব৷ এখানেই শুরু সালভানির মিশন৷ তাকে দেখাতে হবে অভিবাসীদের জলেও আটকানো যায়'৷
ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইতালির সরকার দেশটির দক্ষিণে অভিবাসী বহনকারী বেশ কয়েকটি জাহাজ নোঙর করা থেকে বিরত রেখেছে৷ জুলাইয়ে সিসিলিতে একোয়ারিয়াস নামের জাহাজকে ভিড়তে দেয়নি ইতালি৷ কয়েকদিন ৬৩০ অভিবাসী নিয়ে সাগরে ভাসার পর তাদের নিতে সম্মত হয় স্পেন৷
সবশেষ ডিকিয়োটি নামের আরেক জাহাজ ১৮০ অভিবাসনপ্রত্যাশী নিয়ে সিসিলিতে আসে৷ এক সপ্তাহ পর তাদের নামার অনুমতি দিলেও তাদেরকে ইউরোপের অন্যান্য দেশে পাঠানোর নির্দেশ দেন সালভানি৷
এদিকে অভিবাসী ঠেকাতে ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার সাথে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে হাঙ্গেরি৷ ইইউ-র অভিবাসী বিষয়ক কোটাব্যবস্থায় অংশ নিতেও নারাজি দিয়েছেন ওর্বান৷