কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি আরো এগিয়ে নিতে তিন দিনের শীর্ষ বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে মিলিত হচ্ছেন দুই কোরীয় নেতা। এই শীর্ষ বৈঠকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য ধরা দেবে বলে দুই কোরিয়ার পাশপাশি আশাবাদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও।
কোরীয় নেতাদের দুইবারের দীর্ঘ বৈঠক এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কিম জং উনের বৈঠকের পরও উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে স্পষ্টভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ দেয়া যায়নি। ঐতিহাসিক এসব বৈঠকের পরও পরমাণুমুক্ত কোরীয় উপদ্বীপের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব মনে হচ্ছে৷
এমনই প্রেক্ষাপটে ৩ দিনের সফরে পিয়ং ইয়ং যাচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন৷ আগামী ১৮ থেকে ২০শে সেপ্টেম্বর তিনি কিম জং উনের সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ সম্পর্কে আলোচনা করবেন৷ এরআগে এপ্রিল ও মে মাসে দুই দেশের সীমান্তে দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়েছিল৷
আসন্ন এই শীর্ষ সম্মেলন সম্পর্কে কিম জং উন বলেন, 'দুই কোরিয়াকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যেতে হবে'৷ বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি এ ক্ষেত্রে আবার উত্তর কোরিয়ার সদিচ্ছা প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, 'কোরীয় উপদ্বীপ থেকে সশস্ত্র সংঘাত ও যুদ্ধের আশঙ্কা সম্পূর্ণ দূর করে 'শান্তির দোলনা' সৃষ্টি করাই তার দেশের স্থায়ী লক্ষ্য'৷
এমনকি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতাসীন সময়ের মধ্যেই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের কাজ শেষ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন কিম৷
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চুং ইয়ুই ইয়ং উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর বলেন, কিম জং উন মার্কিন প্রশাসনের মূল্যায়নের সঙ্গে একমত নন৷ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে তার দেশ যথেষ্ট উদ্যোগ দেখিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন৷ বিশেষ করে দেশের একমাত্র পরীক্ষার ক্ষেত্র ধ্বংস করে ফেলায় উত্তর কোরিয়ার পক্ষে আর পরমাণু পরীক্ষা করা সম্ভব নয় বলে কিম জানিয়ে দেন৷ আন্তর্জাতিক সমাজ তার এই উদ্যোগকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন৷
দুই কোরিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে তৃতীয় সংলাপ আশার আলো জাগালেও পিয়ং ইয়ং ও ওয়াশিংটনের শীতল সম্পর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়ে গেছে৷ গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আচমকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর উত্তর কোরিয়া সফর বাতিল করেন৷ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে অগ্রগতির অভাবের কারণে ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর কোরিয়ার প্রতি কড়া মনোভাব দেখাচ্ছে৷
তবে কিম চান, তার প্রাথমিক পদক্ষেপের স্বীকৃতি হিসেবে মার্কিন প্রশাসনও কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক৷ অন্যদিকে ওয়াশিংটন ইতিমধ্যেই যথেষ্ট ছাড় দিয়েছে বলে দাবি করছে৷ বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া স্থগিত রেখে উত্তর কোরিয়ার প্রতি আস্থা দেখানো হয়েছে বলে ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে৷