একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকারের পদত্যাগ চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এজন্য সরকারকে বিদায় করতে নেতাকর্মীদের ইষ্পাত কঠিন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে এই দাবি জানান তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকার থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এ সরকারকে এখন চলে যেতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দফায় দফায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক ঘণ্টার মানববন্ধন করে দলটি। এতে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘প্রায় আট মাস ধরে অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে সরকার। আমরা কোনো করুণা চাই না। আইনিভাবে তাকে মুক্ত করতে চাই। কিন্ত সরকার তার মুক্তির পথ বন্ধ করছে। বেগম খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি তার অধিকার।’ খালেদাকে কারাগারে রেখে অংশগ্রহণমূলক কোনো নির্বাচন হবে না বলে মানববন্ধনে জানান ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আজকে প্রতি পদে পদে স্বাধীনতা হরণকরছে। একটার পর একটা কৌশল নিচ্ছে সরকার। এখন সরকার নতুন করে সারা দেশে গ্রেপ্তার শুরু করেছে। প্রায় এক লাখের উপরে মানুষকে আসামি করেছে৷ এভাবে গ্রেপ্তার, অত্যাচার, নির্যাতন করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের দিন শেষ হয়ে এসেছে। তাদের সরে যেতে হবে বলে। আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে গেছে।’
‘এই ভয়াবহ নরক সরকার থেকে মুক্তি পেতে হবে। সমগ্র জাতিকে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই পাথর সরিয়ে দিই৷ একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি দেশে।’
মানববন্ধনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মো. শাজাহান, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সফু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া মানববন্ধন ঘিরে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলে পুলিশ। প্রেসক্লাব ও এ আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিপুল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।