logo
আপডেট : ২৬ নভেম্বর, ২০১৮ ১০:৩১
৫০ আসনে প্রার্থী পাল্টাতে পারে বিএনপি
প্রথম বাংলাদেশ ডেস্ক

৫০ আসনে প্রার্থী পাল্টাতে পারে বিএনপি

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে যারা ধানের শীষ নিয়ে লড়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ৫০ জন বাদ পড়বেন আগামী জাতীয় নির্বাচনে। তাদের জায়গায় নতুন মুখ দেবে বিএনপি।

৩০ ডিসেম্বরের ভোটে লড়তে এরই মধ্যে দলীয় প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। দুই জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঘোষণা করতে চায় দল।

সুনির্দিষ্ট করে না বললেও নেতারা জানাচ্ছেন, বিএনপির প্রার্থী হিসেবে যাদের মুখে শেষ হাসি ফুটবে তাদের অধিকাংশই সাবেক সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী।
সম্ভাব্য প্রার্থীর মৃত্যু, বার্ধক্যজনিত বা আইনি বাধায় নির্বাচন করতে পারবেন না এমন অনেক আসনে স্বাভাবিকভাবেই নতুন মুখ ধানের শীষ প্রতীক পাবেন। যদিও এমন আসনে নেতাদের স্বজনরা অগ্রাধিকার পাচ্ছেন।

দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অতীতে সংসদ সদস্য ছিলেন, বিরোধী দলে থাকলেও দলের সঙ্গে ছিলেন, আন্দোলনে অবদান ছিল এমন নেতাদের মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে কেউ কেউ পুরো সময় ধরে নিষ্ক্রিয় ছিলেন এমন নেতাদের কারও কারও কপাল পুড়তে পারে। এ ছাড়া দুই জোটের শীর্ষ নেতারা যেসব আসনে নির্বাচন করবেন, সেখানে বিএনপির জনপ্রিয়দেরও কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন।

আজ থেকে দলের চূড়ান্ত মনোনয়নপ্রাপ্তদের চিঠি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। যদিও গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তিন দিনের মধ্যে আমরা চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্য ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নতুন, পুরান বলা মুশকিল। তবে দলও রাখতে হবে, জোটও রাখতে হবে। দলে অবদান, অতীত দেখতে হবে। শুধু সার্টিফিকেট দেখে প্রার্থী করা যাবে না। তবে সবকিছুর পরও যিনি জিততে পারবেন, তার ব্যাপারে সর্বোচ্চ ছাড় দিতে হবে।’

গত কয়েক দিনের টানা বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও স্কাইপে যুক্ত ছিলেন। আসনভিত্তিক প্রার্থী ধরে ধরে যাচাই-বাছাই করে শীর্ষ নেতাদের কিছু আসনে একজন অতিরিক্ত রেখে চূড়ান্ত হওয়া অন্য আসনগুলোতে মূল প্রার্থীর বাইরেও দুজন করে প্রার্থী রাখা হয়েছে, যাতে কোনো কারণে একজনের নির্বাচন করতে সমস্যা হলে অন্যজন লড়তে পারেন।

দলের দপ্তরের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন নেতা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে, তাদেরকে ওভারফোনে ডেকে দলীয় চিঠি দেওয়া হবে। পরে তারা নিজ নিজ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দেবেন। কাল থেকে সেটা শুরু হতে পারে বলে জানি।’

বিএনপি সর্বশেষ ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। ওই সময় ২৫৯টি আসনে বিএনপি এককভাবে দলীয় প্রার্থী দিয়েছিল। ওই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীসহ জোটের অন্য শরিকদের ৪১টি আসন ছেড়েছিল বিএনপি। যদিও এবার ২০ দলীয় জোট ছাড়াও নতুন সঙ্গী হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যে কারণে আসন বণ্টন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে দলটির শীর্ষ নেতাদের।

যেসব আসনে পাল্টাতে পারে প্রার্থী

বার্ধক্যের কারণে স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকারের জায়গায় পঞ্চগড়-১ আসনে নতুন মুখ হিসেবে জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে নওশাদ জমির সম্ভাব্য প্রার্থী।

পঞ্চগড়-২ আসনে নতুন মুখ আসবে। এখানে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ না হয় জাগপার তাসমিয়া প্রধান নির্বাচন করতে পারেন।

দিনাজপুর-২ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান নির্বাচন না করলে বিএনপির স্থানীয় নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম নির্বাচন করতে পারেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম মারা যাওয়ায় যশোর-৩ আসনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সম্ভাবনা বেশি।

প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মানিকগঞ্জ-১ আসনে খোন্দকার আখতার হামিদ ডাবলু বা আকবর হোসেন বাবলুর মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে সাবেক মন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মঈনুল ইসলাম শান্ত, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে মরহুম হারুনার রশীদ খান মুন্নুর আসনে তার মেয়ে আফরোজা খান রিতা নতুন মুখ হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন।

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চট্টগ্রাম-৭ আসনে তার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বা স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, হান্নান শাহর গাজীপুর-৪ আসনে ছেলে রিয়াজুল হান্নানের সম্ভাবনা বেশি।

এম শামসুল ইসলামের মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই ও শামসুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন মনোনয়ন চেয়েছেন। এখানে প্রার্থী বদল হতে পারে।

নওগাঁ-৩ আসনে সাবেক ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকীর ছেলে পারভেজ হামিদ সিদ্দিকী মনোনয়ন পেতে পারেন। তার স্ত্রী নাসরিন জাহান সিদ্দিকীর কথাও শোনা যাচ্ছে।

ফজলুর রহমানের (পটল) নাটোর-১ আসনে তার স্ত্রী কামরুন্নাহার শিরিন বা বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু মনোনয়ন পেতে পারেন।

জয়পুরহাট-১ আসনে প্রয়াত নেতা আব্দুল আলীমের ছেলে ফয়সল আলীম নির্বাচন করতে পারেন।

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া) আসনে সালাহউদ্দিন আহমেদ নির্বাচন করতে না পারলে ২০০৮ সালের মতো এবারও তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ প্রার্থী হতে পারেন।

 

প্রকাশক/সম্পাদক: আবুল হারিস রিকাবদার
প্রকাশক ও সম্পাদক কর্তৃক প্রথম বাংলাদেশ/শিবপুর, নরসিংদী থেকে প্রকাশিত
ফোনঃ বার্তা-০১৭০০-০০০০০০, বিজ্ঞাপন-০১৯০০-০০০০০০, ই-মেইলঃ prothombangladeshnews@gmail.com