স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে (এলজিইডি) আওতাধীন যেসব কর্মচারীদের চাকরি হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল তাদের পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন।
সেইসঙ্গে রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত কর্মচারীদের চাকরিকাল গণনা, টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড জটিলতা নিরসনে সর্বোচ্চ আদালতের রায় অবিলম্বে বাস্তবায়নেরও দাবি জানান তারা।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
এলজিইডির আওতাধীন ৩ হাজার ৮২৩ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী পদে আত্মীকণের জন্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন না করে আনুমানিকভাবে চাকরিচ্যুত করা, বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মচারী হয়রানি ও রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত কর্মচারী চাকরিকাল গণনা, টাইমস্কেল-সিলেকশন গ্রেড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এলজিইডি কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সময়ে বেশকিছু প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। এসব প্রকল্প মাস্টাররোলে নিয়োগকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকাংশই ২০ থেকে ২৫ বছর অস্থায়ীভাবে চাকরি করে আসছেন। এসব প্রকল্প ও মাস্টার রোলের কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাদের চাকরি রাজস্ব খাতভুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করেও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত পাননি। তাই হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। সকল জনবলের চাকরি রাজস্বভুক্তির নির্দেশনা হাইকোর্ট দিলেও এলজিইডি কর্তৃপক্ষ প্রায় ৬ হাজার কর্মচারীর মধ্যে আড়াই হাজার কর্মচারীকে রাজস্বভুক্ত করেন। অবশিষ্ট ৩ হাজার ৮২৩ জন কর্মচারীর চাকরি অদ্যাবধি রাজস্বভুক্ত করা হয়নি। কেন করা হয়নি তারও ব্যাখ্যা দেয়টি এলজিইডি।
তারা আরও বলেন, হাইকোর্টের রায়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে যে বিভিন্ন প্রকল্পের অবশিষ্ট ৩ হাজার ৮২৩ জন কর্মচারীর চাকরি রাজস্বভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রত্যেকের চাকরি চলমান রাখতে হবে। কিন্তু হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে কিছু কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের অডিটরসহ ১১ জন কর্মচারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আগামী ২৫ জুলায়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো সন্তোষজনক ব্যবস্থা গৃহীত না হলে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে বলে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কর্মসূচির মধ্যে আছে- ২৯ হতে ৩১ জুলাই পর্যন্ত আগারগাঁও এলজিইডি ভবন চত্বরে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়প্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবস্থান কর্মসূচি।
২ হতে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এলজিইডির অন্যান্য দপ্তরে চাকরি নিয়মিতকরণ, হয়রানি বন্ধ, টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায় বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজধানীর প্রতিটি দফতরে গণসংযোগ করা হবে।
১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজধানীতে কর্মচারী সমাবেশ আয়োজনের মধ্যেমে পরবর্তী বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব হেদায়েত হোসেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি ওয়ারেছ আলী, প্রধান উপদেষ্টা লুৎফর রহমান খান, কার্যকরী সভাপতি আবদুল হাই মোল্লা, সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব বাহার উদ্দিন প্রমুখ।