পাকিস্তানের তরফ থেকে প্রথমে ভূপাতিত জেট বিমানের দুজন ভারতীয় পাইলটকে আটকে রাখার দাবি করলেও পরে তাদের সেনাবাহিনী জানায়, ‘মাত্র একজন’কে আটকে রাখা হয়েছে। গতকাল বুধবার ভারতীয় ওই পাইলটের ছবি টুইট করেন মেজর জেনারেল আসিফ গফফুর। তিনি লিখেন, ‘একজন পাইলট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার সকালে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় দুটি ভারতীয় ফাইটার জেটকে ভূপাতিত করে দেশটির সেনারা। এ সময় দুজন পাইলটকে আটকের কথা বলা হলেও তা পরে শুধরে নেন করেন মেজর জেনারেল আসিফ গফফুর।
এ প্রসঙ্গে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘একজন পাইলট, যাকে আগে “নিখোঁজ” ঘোষণা করা হয়েছিল...পাকিস্তানে আটক করা হয়েছে। একটি ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, তাতে দেখা যায় পোশাক পরিহিত একজনকে ঘিরে রয়েছেন পাকিস্তানি সেনারা।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ভারত...ভারতীয় বায়ুসেনার একজনের আহত ছবি প্রকাশ করার জন্য পাকিস্তানের তীব্র নিন্দা করছে। এটা সমস্ত আন্তর্জাতিক নিয়মবলী এবং জেনেভা কনভেনশনের বিরোধী। পাকিস্তানকে বলা হচ্ছে, তাদের হেফাজতে ভারতীয় সুরক্ষাকর্মীর যেন কোনো ক্ষতি না হয়। তার দ্রুত এবং নিরাপদ ফেরার আশা রাখছে ভারত।’
সেই সঙ্গে আরো বলা হয়, পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ৯০ সেকেন্ডের অপারেশনে পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মোহম্মদ ক্যাম্পে হামলা করে ভারতীয় পাইলট সেনারা। এর একদিন পর বুধবার সকালে পাকিস্তানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ হয় তাদের। ভারত জানায়, পাকিস্তানের আগ্রাসী প্রত্যুত্তর অনভিপ্রেত। কারণ, ভারতীয় পাইলটরা কোনো নাগরিক বা সেনাকর্মীকে আক্রমণ করেনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে উদ্ধৃত করে সংবদসংস্থা পিটিআই জানায়, ‘আমাদের বিমান হামলায় না কোনো পাকিস্তানি নাগরিক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, না পাকিস্তানি সেনাকে টার্গেট করা হয়েছে। সতর্কতার সঙ্গেই হানা দিয়েছে আমাদের বিমান সেনারা। তা সত্ত্বেও ভারতের নামে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে পাকিস্তান।’
ভারতীয় এয়ার পাইলট যখন পাকিস্তানের হেফাজতে, ঠিক সেই সময় একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সমালোচনায় পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে পাকিস্তানের বহু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেছেন, আটকে রাখা পাইলটের সঙ্গে যেন খারাপ কিছু না হয়।
উপমহাদেশের পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে ক্রমশ বেড়ে চলা উত্তেজনা থামানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছে আন্তর্জাতিক মহল। গতকাল বুধবার রাশিয়ার তরফে বলা হয়, ‘ভারত ও পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এবং দুই বন্ধু দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি হওয়ায় আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা দুদিক থেকে যাতে শান্তি এবং সমস্যাগুলি রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা যায় সেদিকে রয়েছি।’ একই কথা বলেছে নেপাল, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।