logo
আপডেট : ২৬ জুলাই, ২০১৮ ১০:১১
বড়পুকুরিয়ার কয়লা ‘উধাও’ তিন সরকারের আমলেই
নিজস্ব প্রতিবেদক

বড়পুকুরিয়ার কয়লা ‘উধাও’ তিন সরকারের আমলেই

দিনাজপুরের ভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির যে কয়লার হিসাব মিলছে না সেটি কোনো একটি সংক্ষিপ্ত সময়ে হয়নি। গত ১৩ বছর ধরে ‘উধাও’ হয়েছে এগুলো যে সময়টিতে দেশ শাসন করেছে মোট তিনটি সরকার।

এর মধ্যে প্রথম দুই বছর ক্ষমতায় ছিল বিএনপি, পরের দুই বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সবশেষ গত নয় বছরে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার।

২০০৫ সালের ১০ অক্টোবর বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উৎপাদন শুরু করে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি। উৎপাদনের শুরু থেকে চলতি বছরের ২৭ জুন পর্যন্ত কয়লা উৎপাদন করা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। যার মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টনের কোনো হিসাব মিলছে না।

কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন সময়ের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে ভিন্ন কথা। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের রিপোর্টে মজুদ কয়লার পরিমাণ দেখানো হয়েছে, ৩৬ হাজার ২৮৬ মেট্রিক টন। এ সময় পর্যন্ত উত্তোলন দেখানো হয়েছে ৭০ লাখ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। খনি কর্তৃপক্ষের হিসাবে এই কয়লার মধ্যে হিসাব মিলছে না ৩৬ হাজার টন।

২০১৫-২০১৬, ২০১৬-২০১৭ এবং ২০১৭-২০১৮ এই তিন অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৩০ লাখ ৪১ হাজার টন কয়লা। এই পরিমাণ কয়লায় হিসাব মিলছে না এক লাখ লাখ ৬ হাজার টনের।

খনি কর্তৃপক্ষ একে সিস্টেম লস হিসেবে দেখাতে চাইছে। অর্থাৎ উত্তোলনের পর, খোলা হাওয়ায় মজুদ, বিক্রির মধ্যে প্রতিবার কিছু কয়লা অতিরিক্ত চলে যাওয়াকেই সিস্টেম লস হিসেবে দেখাতে চাইখে খনি কর্তৃপক্ষ।

তবে খনি শ্রমিক ও স্থানীয় কয়েকজন কয়লা ব্যবসায়ী একে চুরি বলছেন। তারা বলছেন, খনি কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া কয়লাও খনি থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। মার্কেটিং বিভাগ, হিসাব বিভাগ পার হয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনুমতি এরপর খনির নিরাপত্তা বিভাগের ছাড়পত্র পেলেই কেবলমাত্র কয়লা বাইরে বের হতে পারে। তাছাড়া ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে যেতে প্রায় সাত হাজার ট্রাকের প্রয়োজন এবং এ জন্য প্রয়োজন অনেক সময়েরও।

বিদুৎ উৎপাদন বন্ধের প্রভাব পড়তে শুরু দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে। বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ ও ঘন ঘন লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। আর এর প্রতিক্রিয়ায় বুধবার বিক্ষোভ করেছে শ্রমিক-জনতা। বিদ্যুতের লোড

কয়লা ‘গায়েবের’ ঘটনায় খনির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টায় পার্বতীপুর মডেল থানায় দুর্নীতি দমন আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারায় ওই মামলা করেন খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিছুর রহমান।

অন্যদিকে মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইমিগ্রেশন পুলিশকে লেখা এক চিঠিতে কয়লাখনি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাবিব খুরশিদ আহমেদসহ চার কর্মকর্তাকে বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে অনুরোধ করেছে।

এই ঘটনায় পেট্রবাংলার তদন্ত কমিটি বিদু্যূৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে সেটি প্রকাশ করতে রাজি হননি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আর এই ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনও আলাদাভাবে তদন্ত করছে।


প্রকাশক/সম্পাদক: আবুল হারিস রিকাবদার
প্রকাশক ও সম্পাদক কর্তৃক প্রথম বাংলাদেশ/শিবপুর, নরসিংদী থেকে প্রকাশিত
ফোনঃ বার্তা-০১৭০০-০০০০০০, বিজ্ঞাপন-০১৯০০-০০০০০০, ই-মেইলঃ prothombangladeshnews@gmail.com