logo
আপডেট : ১৯ জুন, ২০২০ ২১:৩১
অনাথ হ্যাপীর বর্ণিল বিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক


অনাথ হ্যাপীর বর্ণিল বিয়ে


একে তো মহামারীর দুর্যোগ। তারপর নেই বাবা-মা। কিন্তু তাকে কী! সীমিত পরিসরে আড়ম্বরপূর্ণভাবেই হয়েছে বিয়ে। শহরের নতুনপাড়া মহল্লা জুড়েই বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। এলাকাবাসীর মুখে মুখে সেই বিয়ের কথা। এই বিয়ের আয়োজন যার জন্য তিনি হলেন নতুনপাড়া মহল্লার বাবা-মা হারা ইভা আকতার হ্যাপী।
করোনা সংক্রমণের কারণে আর দশটি বিয়ের মতো জাঁকজমকপূর্ণ জনসমাগম ছিল না এই বিয়েতে। তারপরও আনন্দের কোনো কমতি ছিল না আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের মাঝে। বিয়ের অনুষ্ঠানে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এসেছিলেন।
শুক্রবার দিনাজপুর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের নতুনপাড়া মহল্লার মৃত হাবিব ও মৃত ইয়াসমিনের মেয়ে ইভা আকতার হ্যাপীর সাথে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মো. হামিদুর রহমানের ছেলে আল মামুনের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের স্বর্ণালংকারসহ যাবতীয় খরচ বহন করেন শহরের ঈদগাহ্বস্তি একতা অটো মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক আলহাজ ওস্তাদ মো. সাইফুল ইসলাম।
করোনা সংক্রমণের কারণে নতুনপাড়া মহল্লায় কনে ইভা আকতার হ্যাপীর বাসায় মেয়ের পক্ষের আত্মীয়-স্বজনকে স্বল্প পরিসরে পর্যায়ক্রমে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা ও ছেলে পক্ষ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের শহরের একটি চাইনিজ রেস্তোরায় স্বল্প পরিসরে দুপুর ১২ টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
ওস্তাদ সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু হ্যাপীর পিতা-মাতা কেউ নেউ, আমি তার অভিভাবক হয়ে তাকে বিয়ে দিয়ে তার পিতা-মাতার দায়িত্ব পালন করলাম। উদ্দেশ্য একটাই- হ্যাপীর যাতে মনে না হয় বাবা-মা নেই বলে তার বিয়েটা যেন তেনভাবে হয়েছে। তাই আমি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছি এ বিয়েতে।
আমন্ত্রিত অতিথি দিনাজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইমদাদ সরকার এবং সাবেক সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. লোকমান হাকিম বলেন, একজন বাবা-মা হারা এতিম মেয়েকে বিয়ে দিয়ে আলহাজ্ব ওস্তাদ সাইফুল ইসলাম একটি মহৎ কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। যা এটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে দিনাজপুরবাসীর কাছে।
উল্লেখ যে, ইভা আক্তার হ্যাপীর বাবা স্থানীয় এক গ্যারেজে কাজ করতেন। চার বছর আগে বাবা হাবিব স্ট্রোক করে মারা যান । এরপর তার মা ইয়াসমিন বেগম তাদের মেয়ে হ্যাপি আর তার একমাত্র বোনকে আগলে রাখেন। দেড় বছর আগে মা ইয়াসমিন বেগম হঠাৎ করেই মারা যান। এরপর দুই বোনের জীবনে নেমে আসে চরম হতাশা। এতিম হয়ে যায় দুই বোন। বাবা মা হারা দুই বোনের দেখভালের দায়িত্ব নেন স্থানীয় একতা অটো মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব ওস্তাদ মো. সাইফুল ইসলাম।


প্রকাশক/সম্পাদক: আবুল হারিস রিকাবদার
প্রকাশক ও সম্পাদক কর্তৃক প্রথম বাংলাদেশ/শিবপুর, নরসিংদী থেকে প্রকাশিত
ফোনঃ বার্তা-০১৭০০-০০০০০০, বিজ্ঞাপন-০১৯০০-০০০০০০, ই-মেইলঃ prothombangladeshnews@gmail.com