একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে নাকাল হয়ে পড়েছে এশিয়ার অর্থনৈতিক পরাক্রমশালী দেশ জাপান।
১৮ জুন পশ্চিম জাপানের ওসাকাতে ৭.১ ভূমিকম্পের পর চলতি মাসের প্রথম দিকে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমি ধসে জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধসে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ডুবে যাওযায় অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে।
দুর্যোগে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং এর ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমি ধসে ২১৯ জনের প্রাণহানিসহ অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। জানমালের এই ব্যাপক ক্ষতিতে ভিটেবাড়ি ছাড়া হয়েছেন অনেকেই। দুর্যোগে আড়াই লক্ষাধিক বসতবাড়িতে পানি সরবরাহ বন্ধ, সহস্রাধিক পরিবারের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল দীর্ঘদিন।
এরপর দুই সপ্তাহেরও বেশি দিন ধরে একটানা তাপদাহে এ পর্যন্ত ৮০ জনের প্রাণহানিসহ প্রায় ২৫,০০০ জনকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার কারণে। অ্যাম্বুলেন্স কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। অনেকের নির্ধারিত ছুটি বাতিল করা হয়েছে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য। তাপদাহে জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠে।
তাপদাহ জাপানের ইতিহাসে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড ভঙ্গ করে ৪১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে- যা ইতোমধ্যে ৪০.৮ ডিগ্রি পর্যন্ত ধারণকৃত ছিল।
দেশটিতে রেকর্ড বর্ষণে বন্যা ও ভূমিধস এবং টানা কয়েকদিনের তাপদাহে প্রাণহানি ঘটার পর এখন টাইফুন আতঙ্কে ভুগছে জাপান। সপ্তাহান্তে দেশটির মূল ভূ-খণ্ডে আঘাত হানতে শুরু করেছে জাপানের দিকে ধেয়ে আসা মৌসুমের ১২ নাম্বার টাইফুন।
টাইফুন ১২ ( যার নাম দেয়া হয়েছে ‘জংদারি’) র প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর। ক্যাটাগরি চার মাত্রার এই টাইফুন শুক্রবার বিকাল থেকে মূল ভুখণ্ডের উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এসময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৮ কিলোমিটার।
শনিবার সকালে টাইফুনটি আরো শক্তিশালী হয়ে ঘণ্টায় ২১৬ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে শুরু করেছে।
টাইফুনের প্রভাবে টোকিও এবং আশপাশে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জাপান আবহাওয়া বিভাগ থেকে বারবার সতর্কতা জারি করা হয়েছে ।
রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় স্থান ভেদে সর্বোচ্চ ৫০০ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে আবহাওয়া বিভাগ আভাস দিয়েছে। হতে পারে প্রাণহানিসহ ভূমিধস।
এভাবেই সাজানো গুছানো সবুজ শ্যামল সুন্দর এই জাপানে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে দেশটি।