গরমে কাবু যুক্তরাজ্যে ‘অচলাবস্থা’
যুক্তরাজ্যের জলবায়ু নিয়ে যে শীতল ধারণা করা হয়, তা যেন বদলে যেতে শুরু করেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ গরমে দেশটিতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। গরমের কারণে সার্জারি অস্ত্রোপচার বন্ধ করেছেন দেশটির চিকিৎসকরা। গরমে তেতে স্লিপার সরে যাওয়ায় রেল চলাচলে আসছে অত্যন্ত ধীরগতি। এমনকি বাজারে ফুরিয়ে গেছে সানস্ক্রিন ক্রিম। সমুদ্রের পানি মারত্মক উষ্ণ থাকায় স্বস্তি মিলছে না সৈকতেও। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর ছেড়ে বেরও হচ্ছেন না তেমন।
মঙ্গলবার দেশটিতে তাপমাত্রা ছিলো ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার নাগাদ তা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাবে বলেই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। দেশটির মানুষের কাছে প্রায় অচেনা এমন গরমে অধিকাংশ লোকজনই কাজে যেতে পারছেন না। মাঠে মাঠে ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। তাপমাত্রার পারদ আরও বাড়ার খবরে তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠাও ছড়িয়েছে।
প্রচণ্ড গরমের কাজে যেতে চাইছেন না অনেকেই। যারা যাচ্ছেনও তারাও কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনার দাবি তুলছেন। কাজ কর্ম অনুষ্ঠানাদি বন্ধ করে ঘরে বসেই গরম এড়াতে চাইছেন অনেকেই। ঘরে এয়ার কন্ডিশনারগুলোতে গরম সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ায় ফ্যানের দোকানে চাপ বেড়েছে।
দেশটির বড় দুই হাসপাতাল মারগেট ও কেন্টে শুক্রবার পর্যন্ত বড় ধরণের কোনো সার্জারি অস্ত্রোপচার হয়নি। হাসপাতালগুলোর ভিতরে ৮৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চরম গরমে সাধারণ চিকিৎসাও বিঘ্নিত।
রেলওয়ে ট্র্যাকে উচ্চমাত্রার তাপের কারণে বেশি গতি নিয়ে ট্রেন চালনায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সড়কগুলোতেও পিচ গলে আটকে যাচ্ছে গাড়ির চাকা। ফলে দেশটির যোগাযোগ মাধ্যম কাবু করে দিয়েছে অত্যধিক মাত্রার গরম।
এদিকে আকাশে মেঘের দেখা মাত্র নেই। দেশের পশ্চিমাঞ্চল জুড়েই এই অবস্থা চলছে। আর ধীরে ধীরে তাপদাহ ছড়িয়ে পড়ছে ইউরোপের অন্যান্য অংশেও।
ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনার দাবি উঠিয়েছে। তারা কর্মস্থলে সবাইকে পাখা, ঠাণ্ডা পানীয় ও হালকা কাপড় পরতে দেওয়ার অনুমতি চাইছে। এছাড়া যারা কায়িক শ্রম দেয় তাদের জন্য ৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট কিংবা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলেই কাজ থেকে ছুটি পাবে।
যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া দপ্তর বলছে, শুক্রবারের পর গরম কিছুটা কমবে। তবে ওইদিন বিকালেই উত্তর ও পূর্ব ইংল্যান্ডের বাসিন্দারা পড়বে ঝড়ো-বৃষ্টির মুখে। সেই বিকালে ৩ ঘণ্টায় ২ দশমিক ৪ ইঞ্চি বৃষ্টির পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। এতে করে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা ও বন্যা পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন সেখানকার বাসিন্দারা।
