ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ২৯ জুলাই, ২০১৮ ১২:১৭

মূল কেন্দ্র পাকিস্তানেও জামায়াতের লজ্জাজনক ভরাডুবি

ভোরের বাংলা ডেস্ক
মূল কেন্দ্র পাকিস্তানেও জামায়াতের লজ্জাজনক ভরাডুবি

জামায়াতে ইসলামীর যত গর্জন, তত বর্ষণ হয় না, তার আরেক নমুনা দেখা গেল পাকিস্তানের সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে। বরাবরের মতোই মূল কেন্দ্রেও ধরাশায়ী দলটি। বরং এবারের ফলাফল আরও লজ্জাজনক হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী একা না, ডুবেছে তাদের জোটের পাঁচ শরিকই। ধর্মভিত্তিক পাঁচটি দলের জোট মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমাল গোটা দেশে পেয়েছে মোট ১২টি আসন।

এই জোটের অন্যতম দুই দল জামায়াতে ইসলামী এবং জমিয়াত উলামায়ে ইসলাম (ফজল) এর দুই প্রধানই লজ্জাজনকভাবে হেরেছেন।

জামায়াতে ইসলামির আমির সিরাজুল হক তার নিজ আসন 'এনএ-৭ লোয়ার ডির-২' তে তেহরিক ই ইনসাফের প্রার্থী মোহাম্মদ বাশিরের কাছে বড় ব্যবহানে হেরেছেন। তেহরিকের নবাগত বাশির যেখানে পেয়েছেন ৬৩ হাজার ১৭ ভোট, সেখানে সিরাজুল পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৪০ ভোট।

অপরদিকে জমিয়াত উলামায়ে ইসলাম (ফজল) এর প্রধান ফজলুর রহমান দুই আসনে নির্বাচন করেছিলেন। দুটিতেই হারতে হয়েছে তাকে। 'এনএ-৩৮ ডেরা ইসমাইল খান-১' এবং 'এনএ-৩৯ ডেরা ইসমাইল খান-২' এই দুই আসনে ফজলুর রহমান হেরেছেন ইমরান খানের দলের প্রার্থী আল আমিন খান গান্দাপুর এবং মুহাম্মদ ইয়াকুব শেইখের কাছে। 

নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়াতে অনেকটা হতাশ পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামি। তাদের এ হতাশা প্রকাশ হয়েছে ক্ষোভের মাধ্যমে। এই পরাজয়কে ইসলামের পরাজয় হিসেবে দেখাতে চাইছে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করা দলটি। আর নিজেদের বদলে জনগণকে দোষ দিতে চাইছে তারা।

পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামির শাখা জামায়াতে ইসলামীর জম্মু-কাশ্মিরের মুখপাত্র এডিভি জাহিদ আলি বলেন, ‘পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ নির্বাচনে ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যদিও তারা মুসলিম বলে পরিচয় দেয়।’

জামায়াত নেতা আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ প্রমাণ করেছে যে তারা কখনো ইসলামি ব্যবস্থায় জীবন পরিচালনা করবে না। ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোকে ভোটে জিতিয়ে তারা তা প্রমাণ করেছে।’

ব্রিটিশ শাসনামলে জামায়াতে ইসলামীর জন্ম দেন বিতর্কিত আলেম সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী। ভারতে ব্রিটিশ রাজ ভাগ করে পাকিস্তান জন্মের বিরোধিতা করা মওদুদী পরে পাকিস্তানের একনিষ্ঠ ভক্ত হন। আর ভারত ও পাকিস্তানে শাখা থাকলেও দলটির মূল কেন্দ্র এখন সে দেশেই অবস্থিত।

মওদুদী শুরু থেকে চেষ্টা করেন ধর্মীয় আবেগ কাজে লাগিয়ে রাজনীতি অবস্থান করে নিতে। কিন্তু দীর্ঘ চেষ্টার পরও সফল হতে পারেনি দলটি।

পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেও জামায়াতের এই চেষ্টা কখনও সফল হয়নি। বরং ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে গণহত্যায় সহযোগিতা ও নিজেরা অংশগ্রহণ করে ঘৃণিত হয়েছে তারা। বাংলাদেশে জামায়াত নেতাদের ফাঁসির সময় উচ্চবাচ্য করা সে দেশের জামায়াত নেতারা বাংলাদেশে সামরিক অভিযান চালানোর মতো আপত্তিকর কথাও বলেছেন। তবে জনতার প্রত্যাখ্যানে আবারও চুপসে গেছে তারা।

উপরে