ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ৩১ জুলাই, ২০১৮ ১০:১১

ইরানের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসতে চান ট্রাম্প

ভোরের বাংলা ডেস্ক
ইরানের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসতে চান ট্রাম্প

কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর ইরানিরা যখনই চাইবে তখনই এই আলোচনা হতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সোমবার হোয়াইট হাউজে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসপে কোন্টে’র সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বেশ কয়েকবার একই কথার পুনরাবৃত্তি করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, তিনি ‘কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই’ ইরানিদের সঙ্গে ‘অবশ্যই সাক্ষাৎ’ করতে চান।

গতকাল সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেছিলেন, বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসা তেহরানের পক্ষে সম্ভব নয়। তার এমন বক্তব্যের পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তার আগ্রহের কথা জানান। সূত্র: পার্স টুডে।

ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে দুটো দেশের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি হুমকি দেওয়ার ঘটনা বেড়েই চলে।

ওই চুক্তিতে ধীরে ধীরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পরিহার করার বদলে দেশটির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছিল। এখন চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ওয়াশিংটন ইরানের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।

কিন্তু ২০১৫ সালে আরো যেসব পক্ষ ওই চুক্তিতে সই করেছিল তারা ইরানের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আসছে। এই দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন এবং রাশিয়া।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রেসিডেন্টের পাল্টাপাল্টি হুমকিতে এই উত্তেজনা আরো তীব্র হয়।

সম্প্রতি ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তার দেশকে নিয়ে মার্কিন ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করতে গিয়ে ওয়াশিংটনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সিংহের লেজ নিয়ে খেলবেন না।’ এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানকে ‘নজিরবিহীন শিক্ষা’ দেয়ার হুমকি দেন।

দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হুমকির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা জানান।

ট্রাম্প বলেন, ‘এটা আমেরিকার জন্য ভালো, তাদের (ইরানের) জন্য ভালো, আমাদের জন্য ভালো এবং গোটা বিশ্বের জন্য ভালো। কোনো পূর্বশর্ত নেই। যদি তারা আলোচনায় বসতে চায় তাহলে আমি আলোচনায় বসব।’

ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমি বিশ্বাস করি শেষ পর্যন্ত সম্ভবত তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এবং তারা যখন চাইবে তখনই আমি তাদের সঙ্গে আলোচনা বসতে রাজি। এটি আমাদের শক্তিমত্তা বা দুর্বলতা প্রকাশ করা নয়। আমি মনে করি এই মুহূর্তে এটিই একটি উপযুক্ত কাজ।’

তবে ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের ব্যাপারে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তবে তার অন্যতম উপদেষ্টা হামিদ আবুতালেবি এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, আলোচনায় বসতে হলে আমেরিকাকে সবার আগে পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসতে হবে।

আবুতালেবির টুইটার বার্তায় বলা হয়েছে, ‘ইরান ও আমেরিকার মধ্যে আলোচনার কণ্টকাকীর্ণ পথ পরিষ্কার করতে চাইলে আমেরিকাকে ইরানি জাতির অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে, শত্রুতা কমাতে হবে এবং পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসতে হবে।’

উপরে