ঢাকা, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৯:১৩

এবার ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

ভোরের বাংলা ডেস্ক
এবার ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

অর্থসহায়তা বন্ধের ঘোষণার পর এবার দেশটিতে ফিলিস্তিনের মিশন বন্ধ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার ওয়াশিংটনে অবস্থিত ফিলিস্তিন মিশন বন্ধের ঘোষণা দেবে ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে দেশটিতে দেয়া অর্থ সাহায্যও বন্ধ করে দিয়েছে মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্র। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের।

রবিবার মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় সোমবার দুপুর) ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন।

সোমবার বোল্টন যে বিবৃতি দেবেন এর কপি এই গণমাধ্যমের কাছে আছে দাবি করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বোল্টন বলবেন, ‘দুই দশক ধরে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধ করে দেয়া হবে। কারণ, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আমেরিকার নেতৃত্বে আলোচনায় বসতে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।’

ফিলিস্তিনিরা দাবি করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করেছে এবং তারা সম্পূর্ণভাবে ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে। কেবল একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক ফোরামের মধ্যস্থতায় আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিন।

বোল্টন বলবেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সবসময় তার বন্ধুরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে থাকবে’।  এছাড়া গাজায় ইসরায়েলের পদক্ষেপের ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তদন্তের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেবেন বোল্টন। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং ওই সংস্থাকে অর্থ বরাদ্দ বন্ধের হুমকি দেবেন জন বোল্টন। এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশন (পিএলও)।

গত বছরও ওয়াশিংটনে ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধের হুমকি দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে আলোচনা চলায় মিশন বন্ধ করা হয়নি। এখনও ইসরায়েল ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি শেষ হয়ে যায়নি। একারণে ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে।

গত ডিসম্বরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী উল্লেখ করে তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন। তারপর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ফিলিস্তিন। এই ঘটনার পর ফিলিস্তিন জানিয়েছে, ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান করায় যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সৎ মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।

শনিবার ইসরাইল অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা দেয় এমন হাসপাতালে দেয়া দুই কোটি মার্কিন ডলারের অর্থ সহায়তা বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বন্ধের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই সহযোগিতা বাতিল করা হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য ত্রাণ বিতরণ করে এমন একটি জাতিসংঘের প্রকল্পকে অর্থ বরাদ্দ বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএনআরডব্লিউএ নামের সংস্থাটি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জরুরি সেবা দিয়ে থাকে। সংস্থাটির সবচেয়ে বড় দাতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা সংস্থাটির ব্যয়ের ২৫ শতাংশ অনুদান দিত।

সম্প্রতি ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিরা যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসরাইলের সাথে শান্তি চুক্তিতে সম্মত হবে, তার দেশ ততক্ষণ কোনো সহযোগিতা দেবে না ফিলিস্তিনকে।

ট্রাম্প বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি নাগরিক ও নেতাদের জন্য যে অর্থ দিতাম, তা বাতিল করছি। যুক্তরাষ্ট্র তাদের বড় অংকের অর্থ দিত এবং আমি বলতে চাই, আপনারা অর্থ পাবেন; কিন্তু চুক্তি করার আগে নয়। যদি চুক্তি না করেন, আমরা আপনাদের কোনো অর্থ আর দেব না।

উপরে