ঢাকা, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৯:৩৪

রাজিব গান্ধী হত্যাকারীদের মুক্তির সুপারিশ

ভোরের বাংলা ডেস্ক
রাজিব গান্ধী হত্যাকারীদের মুক্তির সুপারিশ

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজিব গান্ধীর হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাত আসামির মুক্তি চেয়ে রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। গত ২৭ বছর ধরে তারা কারাভোগ করছেন। সোমবার এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করছে।

গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী ডি জয়াকুমার বলেছেন, এই বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে জনসমর্থন রয়েছে।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বানওয়ারিলাল পুরোহিতকে রাজিব গান্ধী হত্যা মামলার একজন আসামি এজি পেরারিভালানকে ক্ষমার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর ক্ষমতাসীন এআইএডিএমকে দোষী সাব্যস্ত সমস্ত আসামির মুক্তির ব্যাপারে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা এসব আসামিদের সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মুক্তির জন্য আবেদন করেছিল।

সরকারি সূত্র জানায়, রাজ্যপাল এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইতে পারেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে সময় নিতে পারেন। কিন্তু সাধারণ এই ধরনের সুপারিশ রাজ্যপাল মেনে নিতে বাধ্য হন।

পেরারিভালান ছাড়া অন্যদের মুক্তি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শ নিতে হতে পারে।

২০১৪ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা যখন সাত বন্দীকে মুক্তির জন্য পদক্ষেপ নেন। কিন্তু কেন্দ্র তার বিরোধিতা করে বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ছাড়া রাজ্য সরকার তাদের মুক্তি দিতে পারে না। একটি জাতীয় সংস্থা দ্বারা তাদের তদন্ত করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় সরকার তার মুক্তির বিপক্ষে। পেরারিভালানের ক্ষমার আবেদনে দাবি করা হয়েছে, সিবিআই তার মামলার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উপেক্ষা করে গেছে।

গত মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজিব গান্ধীর খুনিদের মুক্তি না দিতে সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ জানায়।

রাজিব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডকে ‘সবচেয়ে জঘন্য ও নৃশংস অপরাধ’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি  খুব বিপজ্জনক উদাহরণ স্থাপন করবে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য অপরাধীরা আন্তর্জাতিকভাবে প্রবৃত্তি ছড়াবে।  

রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায়  যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সাত আসামি হচ্ছেন- পেরারিভালান, মুরুগান, সান্থান, নলিনী, রবার্ট পাইয়াস, জয়াকুমার ও রবিচন্দ্রন।

রাজিব গান্ধীকে ১৯৯১ সালের মে মাসে হত্যা করা হয়। হত্যায় জড়িত আসামিরা সবাই শ্রীলঙ্কাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন টাইগার অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) সদস্য।

শ্রীলঙ্কায় ১৯৮৭ সালে ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ওপর ক্ষুব্ধ হয় তামিল গেরিলারা। অবশ্য তাকে হত্যা করার ঘটনায় ২০০৬ সালে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে এলটিটিই। শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনী ২০০৯ সালে অভিযান চালিয়ে এলটিটিইকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে।

চলতি বছরের জুনে রাজিব গান্ধীর দুই সন্তান কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ও তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তাদের পিতার সব হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। ২০০৮ সালে রাজিব গান্ধী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরণ-কে দেখতে কারাগারে যান।  

উপরে