হুমকি দিলে ডুগডুগি বাজাবো না: কাদের
আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এবং তাদের দোসররা নাশকতা ও সহিংসতার ছক আঁটছে বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘লাফালাফির পরিণতি শুভ হবে না। হুমকি-ধামকি দিলে আমরা ঘরে বসে ডুগডুগি বাজাবো, তা হবে না।’
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলির সঙ্গে দলের সহযোগি সংগঠনের এক সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কামাল হোসেনের গণফোরাম এবং তৃতীয় শক্তি হওয়ার ঘোষণা দেয়া তিন দলের জোট যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে ঐক্য গড়তে মরিয়া বিএনপি। একে তারা বলছে ‘জাতীয় ঐক্য’।
কথিত এই জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘দেশের রাজনীতি অঙ্গনে অশুভ শক্তির পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। আন্দোলনে ব্যর্থ হৃযে বিএনপি এবং তাদের দোসররা নাশকতা ও সহিংসতার ছক আঁটছে। দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে।’
দেশের ৬৬ শতাংশ মানুষ যে দল (আওয়ামী লীগ) এবং দলটির নেত্রীকে সমর্থন করে, এই সিংহভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হয় কীভাবে প্রশ্ন রাখেন কাদের। বলেন, ‘এটা তো জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। জনতা নয়, নেতায়-নেতায় ঐক্য। এই পাঁচমিশালী জগাখিচুড়ি ঐক্যের কোনও ভবিষ্যত আছে বলে আমরা মনে করি না।’
‘জনগণ আবারো নৌকায় ভোট দেবে’
জনগন ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে দাবি করে কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে তারা আবারো নৌকায় ভোট দেবে।’
শনিবার ১৪ দলীয় জোটের নাগরিক সভা সম্পর্কে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘১৪ দল পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে, নিজেরাও বসেছে। এখন তারা মহানগর নাট্যমঞ্চে আরও একটু বড় পরিসরে নেতাকর্মীদের সমাবেশ করবে। তবে এটা বিএনপির সঙ্গে কোনও পাল্টাপাল্টি নয়।’
‘পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আমরা করব না। আমরা সংঘাত করবো না। আমরা তো ক্ষমতায় আছি। তবে যদি নৈরাজ্য, নাশকতার চেষ্টা হয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আর দাঁতভাঙা জবাব দেবে জনগণ।’
একইদিন সমাবেশ করবে জানিয়েছে বিএনপি। তবে সমাবেশ আয়োজনে এখনও অনুমতি পায়নি দলটি। এ ব্যাপারে কাদের বলেন, ‘বিএনপির সভাটা কবে হবে, এখনও ঠিক হয়নি। তারা জোর করে ২৯ তারিখে সমাবেশ করবে? কেন এই জেদাজেদি আর এত লাফালাফি? এত লাফালাফির পরিনাম শুভ হবে না।’
‘১০ বছরে তারা ১০মিনিটও রাস্তায় নামতে পারেনি। এখন তারা হঠাৎ করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে খুশি করতে আর নিজেদের ব্যর্থতা ডাকার জন্য লাফালাফি করছেন। হুমকিধামকি দিয়ে আন্দোলন করবেন, আর আমরা ঘরে বসে ডুগডুগি বাজাবো, তা তো হবে না।’
১ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ
১ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী সারাদেশে গণসংযোগ করা হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
বলেন, ‘আমরা ভোটারদের কাছে যাবো। বাড়িতে-বাড়িতে যাবো গণসংযোগ করবো। রাস্তায় অবরোধ করে মানুষের জন্য দূর্ভোগ হবে এমন কোনও সভা-সমাবেশ করবো না। আর রাস্তা অবরোধ বা বন্ধ করে কাউকে সভা-সমাবেশ করতেও দেওয়া হবে না। জনগনের দুর্ভোগ কিছুতেই হতে দেবো না।’
‘আমরা নিজেরাই নিয়ম মেনে চলছি। অন্য কেউ নিয়ম ভঙ্গ করে রাস্তায়, প্রেসক্লাবের সামনে, পল্টনের রাস্তায় সভা-সমাবেশ করবে, সেটা অ্যালাউ করা হবে না। জনগনের দুর্ভোগ আমরা কিছুতেই হতে দিবো না।’
এছাড়া সারা দেশের সর্বত্র দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আখতার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার প্রমুখ উপস্থি ছিলেন।
এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদের।
এ বিষয়ে কাদের বলেন, ‘নেত্রীর দিকনির্দেশনা তাদের বলেছি। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তারা সবাই অঙ্গিকার করেছেন।’
