৬১ নম্বর ওয়ার্ড: শিক্ষা জোন হিসেবে গড়ার অঙ্গীকার
শিক্ষা জোন হিসেবে ওয়ার্ড গড়তে চান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নব সম্পৃক্ত ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এ ওয়ার্ডে রয়েছে দেশের খ্যাতনামা একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভবিষ্যতে এ ওয়ার্ডে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করাসহ কারিগড়ি শিক্ষালয় স্থাপন করতে চান প্রার্থীরা।
এছাড়া সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক নির্মূল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এ ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা, বিশুদ্ধ পানির সমস্যা সমাধান, অলিগলিতে লাইট, রাস্তা সংস্কার, স্যুয়ারেজ লাইন, খেলার মাঠ, কমিউনিটি সেন্টার, পাবলিক টয়লেট, সিসি ক্যামেরা, খেলার মাঠ, সরকারি হাসপাতাল স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা লিফলেট হাতে নিয়ে সকাল-সন্ধ্যা চালাচ্ছেন বিরামহীন প্রচার।
৬১ নম্বর ওয়ার্ড যাত্রাবাড়ীর কিছু অংশ ও কদমতলী থানার আংশিক এলাকা নিয়ে গঠন করা হয়েছে। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬৬৫। পুরুষ ২৩ হাজার ৩২৩ ও মহিলা ২২ হাজার ৩৪২ জন।
৬১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে দেশের খ্যাতনামা এ কে স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, দনিয়া কলেজ, ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যার জন্য এ ওয়ার্ড শিক্ষা জোন ওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত।
ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। অপ্রতুল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সড়কে থাকে পয়োনিষ্কাশনের দুর্গন্ধময় পানি। সামান্য বৃষ্টিতে সড়ক ও বাসাবাড়ি তলিয়ে যায়। অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক স্ট্যান্ডের কারণে শনিরআখড়া-দোলাইপাড় সড়কে থাকে তীব্র যানজট।
ওয়াসার পানিতে রয়েছে দুর্গন্ধ। রয়েছে তীব্র গ্যাস সংকট, ভয়াল মাদকের ছোবল। শনিরআখড়া-দোলাইপাড় এবং বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ সড়ক থেকে কুদারবাজার পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে রয়েছে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ও দোকানপাট। ফাস্টফুড ও রেস্তোরাঁর নামে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের আড্ডাবাজির আস্তানা। ৬১ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে প্রার্থীরা হলেন : কদমতলী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দনিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. জুম্মন মিয়া (ঘুড়ি); বৃহত্তর শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, দনিয়া এ কে হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং দনিয়া কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মরহুম জহির আলমের ছেলে দনিয়া ইউপির ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার এবং এ কে হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. শাহ আলম (ঠেলাগাড়ি); এ কে স্কুল অ্যান্ড কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য মো. শুরুজ্জামান ভূঁইয়া, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি (প্রস্তাবিত) মো. জাকির হোসেন অনু (ঝুড়ি), শাহী মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মো. শাহ আলম শাহী (র্যাকেট), মো. মহসিন মিয়া (ট্রাক্টর), মো. জালাল উদ্দিন মিয়া সেলিম (করাত), মো. জহিরুল আলম মামুন (টিফিন ক্যারিয়ার) এবং এসএম রইস উদ্দিন (রেডিও)।
দনিয়া ইউপির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জুম্মন মিয়া বলেন, আমি বৃহত্তর শ্যামপুর ইউপির দনিয়া ১নং ওয়ার্ডের ২৩ বছর মেম্বার ছিলাম এবং দনিয়া ইউপিতে ৮ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এলাকায় উন্নয়ন করেছি বিধায় বাসিন্দারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন।
আমি আশাবাদী, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও বাসিন্দারা ভোট দিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডের অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করব।
দনিয়া নিবাসী শিক্ষানুরাগী মরহুম জহির আলমের ছেলে দনিয়া ইউপির ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মো. শাহ আলম বলেন, আমার বাবা মরহুম জহির আলম বৃহত্তর শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং দনিয়া এ কে হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও দনিয়া কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
আমিও বাবাকে অনুসরণ করে মানুষের সেবা দিয়ে আসছি। বর্তমানে এ কে স্কুল অ্যান্ড কলেজ গভর্নির বডির সদস্য ও দনিয়া ইউপির মেম্বার নির্বাচিত হয়ে মানুষকে সেবা দিচ্ছি। ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে একটি পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক প্রতিহিংসামুক্ত আদর্শ ওয়ার্ড উপহার দেব।
৬১ নম্বর ওয়ার্ডের জঙ্গি ও সন্ত্রাস নির্মূল কমিটির সদস্য সচিব মো. জাকির হোসেন অনু বলেন, আমার বাবা মরহুম বাহাদুর মেম্বার দনিয়া ইউপির একটানা ৩৫ বছর মেম্বার ছিলেন। তিনি মানুষের সেবা করেই এ দুনিয়া থেকে চলে গেছেন।
কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে বাবার মতো আমিও ওয়ার্ডবাসীকে সঙ্গে নিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড উপহার দেব। প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসন। মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন এবং অসহায় ও দুস্থদের পাশে গিয়ে সেবা করব।
এ কে স্কুল অ্যান্ড কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য মো. শুরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, সারাটা জীবন মানুষের সেবায় কাজ করে আসছি। অন্যায়ের সঙ্গে কোন আপস করিনি। কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে পরিচ্ছন্ন ফুটপাত ও রাস্তাঘাট তৈরি, আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অবহেলিত শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত, দুর্নীতিমুক্ত কাউন্সিলর কার্যালয় গড়ে তোলা, শিশুপার্ক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শিশুপার্ক ও আধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের অঙ্গীকার করেন। শাহী মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মো. শাহ আলম শাহী (র্যাকেট) বলেন, বাসিন্দাদের পাশে থেকে এলাকার রাস্তাঘাটসহ সামাজিক কাজ করে মানুষের সেবা দিয়ে আসছি। সুষ্ঠু ভোট হলে বাসিন্দারা আমাকেই ভোট দেবেন। নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডের রাস্তা, স্যুয়ারেজ লাইন, খেলার মাঠ, কমিউনিটি সেন্টার, পাবলিক টয়লেট, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, খেলাধুলার মাঠ, হাসপাতাল স্থাপনসহ একটি আদর্শ ওয়ার্ড উপহার দেব।
