সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে এগিয়ে আছেন আবুল হারিস রিকাবদার
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান বীর মুক্তিযোদ্ধা শিবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হারিস রিকাবদার। স্থানীয়ভাবে তিনি কালা মিয়া স্যার নামে পরিচিত।
তিনি ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের মহানায়ক শহীদ আসাদের বিশ্বস্ত সহযোগী ছিলেন। তাই তার নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন শহীদ আসাদ কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুল ও কলেজ। সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সম্প্রতি অবসর গ্রহণ করেছেন তিনি।
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আবুল হারিস রিকাবদার ১৯৬৩ সাল থেকে ভাসানী ন্যাপের সক্রিয় কর্মী হিসেবে বামপন্থী রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।
তিনি ১৯৬৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জেলার মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া বাজারে মাওলানা ভাসানীর ডাকে হরতাল পালনের সময় আহত হন। এ সময় তার তিন সহযোদ্ধা পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তিনি আওয়ামী লীগ বিরোধী স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৬ সালে তিনি মাছিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে পঞ্চমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে তিনি এ দায়িত্বে আছেন।
জানা যায়, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে জাগদলে যোগদানের মাধ্যমে বিএনপির সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদ ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি সবসময়ই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি শিবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে ৩০ বছরের অধিককাল দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের সব কর্মকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। শিবপুরের রাজনীতিতে তিনি শিক্ষানুরাগী, সংস্কৃতিমনা ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত।
নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসন ৯টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে ঘটিত। সভাপতি ও চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে সব ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে ও সাংগঠনিকভাবে এ আসনে বিএনপি যথেষ্ট শক্তিশালী।
নেতাকর্মীরা জানান, আবুল হারিস রিকাবদার ১৯৬৩ সালে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে নারী শিক্ষার প্রসারে শহীদ আসাদ কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। শিবপুরের নারী শিক্ষায় স্কুলটি বিশেষ অবদান রাখছে। বর্তমানে স্কুলটি নরসিংদী জেলার অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত। তিনি শিবপুরের সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সবসময়ই অবদান রাখছেন।
ব্যক্তিজীবনে তিনি চার সন্তানের জনক। বড় মেয়ে ২৬তম বিসিএসের মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দিয়ে সরকারি শহীদ আসাদ কলেজে কর্মরত আছেন। তার বড় ছেলে ২৪তম বিসিএসের মাধ্যমে কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ ক্যাডারে যোগ দিয়ে বর্তমানে নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (মূল্য সংযোজন কর) কর্মরত আছেন। ছোট ছেলে ২৭তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দিয়ে বর্তমানে এসপি হিসেবে ডিএমপিতে কর্মরত আছেন। ছোট মেয়ে ৩৪তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে বর্তমানে ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট, সিলেটে কর্মরত আছেন।
এ বিষয়ে শিবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হারিস রিকাবদার কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি ছাত্র ইউনিয়ন দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে বিএনপির শুরু থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শিবপুরে বিএনপির কার্যক্রম শুরু করি। প্রথমে আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্ব পাই এবং এখন পর্যন্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এই সময়ে বিএনপির সব কার্যক্রমে সামনে থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম দলীয় কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। যার কারণে একাধিকবার মামলার আসামিও হয়েছি। আমার সরাসরি নেতৃত্বে বিএনপির চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করেছি। এছাড়া দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমার সর্বোচ্চ শক্তি সামর্থ্য দিয়ে আধুনিক শিবপুর বিনির্মাণে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। তাই এবার শিবপুরের সাধারণ মানুষ চায় আমি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করি। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে দল থেকে যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নেব।
