‘বোমাতঙ্কে সুইমিংপুলে বসে কাঁদছিল কিউই ক্রিকেটাররা’
পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা নিত্যদিনকার খবর। এমন কোন দিন থাকে না যেদিন দেশটির কোথাও না কোথাও, কোন না কোন হামলার ঘটনা না ঘটে। পাকিস্তানে এই অবস্থা চলে আসছে অনেক আগে থেকেই। যার হাত থেকে বাদ যায়নি ক্রিকেটও। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট টিমের বাসে সন্ত্রাসী হামলার কারণে এখনও পুরো ক্রিকেট ফেরেনি পাকিস্তানে। তবে শুধু সেটিই পাকিস্তানে কোন ক্রিকেট দলের ওপর একমাত্র হামলা নয়। এর আগেও দেশটিতে খেলতে এগিয়ে এমন শঙ্কায় পড়েছিল নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল।
ঘটনা ২০০২ সালের। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে এপ্রিলে পাকিস্তান গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এ সিরিজটি নির্ধারিত ছিল ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। কিন্তু ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ তারিখে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার কারণে সে দফায় পিছিয়ে দেয়া হয় সিরিজটি। ফলে ২০০২ সালের এপ্রিলে হয় এটি। তবে পুরো সিরিজ খেলতে পারেনি কিউইরা। থামতে হয়েছিল প্রথম টেস্টের পরই। লাহোরে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইনজামাম উল হকের ৩২৯ রানের ইনিংসে ভর করে ৩২৪ রানের বিশাল জয় পায় স্বাগতিক পাকিস্তান।
সিরিজের শেষ টেস্টটি হওয়ার কথা ছিল করাচিতে। ম্যাচ শুরুর দিন সকালেই দুই দলের টিম হোটেল ঘেঁষে বোমা হামলা হয়। তবে সেটি পড়েছিল পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইনজামামের রুমের পাশে। তখন আতঙ্কে হোটেলের সুইমিংপুলে বসে কাঁদছিলেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। প্রায় ১৮ বছর পর সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছেন খুব কাছ থেকে হামলাটি দেখা ইনজামাম। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় এক সপ্তাহ ঠিকঠাক ঘুমোতে পারেননি পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে তিনি নিজ চোখে সব দেখার পর নিজেকে সামলে নিতে অনেক সময় লেগেছিল। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে ইনজামাম বলেছেন, ‘আমরা যখন করাচিতে গেলাম তখন হলো বোমা হামলা। এটা লাহোরে প্রথম টেস্টের পরের ঘটনা। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া যে কোন খেলোয়াড় আহত হয়নি। খুবই ভয়ানক এক দিন ছিল। যে পাশে বোমাটা ব্লাস্ট হলো, আমার রুম ছিল সে পাশেই। ঘরের এক পাশের আয়না ভেঙে আরেক পাশের দেয়ালে আছড়ে পড়েছিল। হোটেলের ঐ পাশের সবগুলো ঘরেই এমন হয়েছিল। আমি সঙ্গে সঙ্গে নিচে গেলাম, দেখি সুইমিংপুলে নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রা কাঁদছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজেই দেখেছি কীভাবে আয়নাগুলো উড়ে একপাশ থেকে আরেক পাশে গিয়েছিল। তবু পুলিশদের জিজ্ঞেস করলাম, এখানে কী হয়েছে? তারা আমাকে জানালো বোমা হামলা এবং আমি যেন নিচে চলে যাই। নিউজিল্যান্ড দল সেদিনই দেশে ফিরে যায়। আমাদের খেলোয়াড়রা প্রায় সপ্তাহখানেক ঘুমোতে পারেনি।’
