ঢাকা, সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:০০

আমার অনেক কিছু দেওয়ার আছে

অনলাইন ডেস্ক
আমার অনেক কিছু দেওয়ার আছে
সৌম্য সরকার

স্পোর্টিং উইকেটে যতটা ভালো, মন্থর উইকেটে ততটাই ম্লান সৌম্য সরকারের ব্যাটিং রেকর্ড। সেই জায়গা থেকে এবার একটু বেরিয়ে এসে খেলেছেন বাঁহাতি এ ওপেনার। সাইফ হাসানকে নিয়ে ১৭৬ রানের জুটি করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ৯ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি তাঁর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সুযোগ পাওয়া, মিরপুরে রান করা, জাতীয় দলে থিতু হওয়া নিয়ে খুলনা থেকে ফোনে সেকান্দার আলীকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন সৌম্য সরকার

সমকাল: মিরপুরে টার্নিং উইকেটে খেলতে কেমন লেগেছে?
সৌম্য সরকার: ভালো অভিজ্ঞতা হলো। নতুন একটা উইকেটে খেললাম। সবকিছু মিলে ভালো ছিল। কয়েকটি কঠিন পরিস্থিতি ছিল।

 
 

সমকাল: মিরপুরের উইকেটে এবার বেশ সাবলীল খেলতে দেখা গেছে আপনাকে। এ ধরনের উইকেটে খেলার জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি ছিল?
সৌম্য: কাজ তো করতেই হয়। আমরা যখন একাডেমি মাঠে অনুশীলন করি, তখনই মিরপুরের উইকেটে অনুশীলন করা হয়। কারণ, ওখানেও একই উইকেট থাকে। স্লো ও টার্ন উইকেট থাকে একাডেমি নেটে। ওইখানে অনেক বেশি প্র্যাকটিস করেছি, সেটি হয়তো কাজে দিয়েছে। 

সমকাল: দ্বিতীয় ম্যাচের আগে আপনাকে ছোট ব্যাটে অনুশীলন করাতে দেখা গেছে।
সৌম্য: ওটা ক্যাচিং ব্যাট (ক্যাচ প্র্যাকটিস করানো হয়)। আমরা সাধারণত ওই ব্যাট দিয়ে প্র্যাকটিস করি টার্ন ও লো বাউন্সি উইকেটে খেলার আগে। নিচু হয়ে ব্যাটিং করার অভ্যাস গড়তে ওটা করা হয়। যেহেতু স্পিন বল একটু নিচে থাকে, টার্ন করে, তাই একটু নিচে থাকা। ডিফেন্স করা বা খেলতে গেলে একটু সামনে ঝুঁকে খেলা ভালো। সাধারণত লম্বা ব্যাটে সোজা হয়ে খেলার চেষ্টা থাকে। ছোট ব্যাটে নিচু না হলে খেলা যাবে না। এ জন্যই দ্বিতীয় ম্যাচের আগে ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন করেছেন ব্যাটাররা। 

 

সমকাল: মিরপুরে খেলার আগে কি নিয়মিতই ছোট ব্যাটে অনুশীলন করেন আপনারা?
সৌম্য: হ্যাঁ, আগেও করেছি। নিয়মিত করা হয়, তা না। স্লো-লো অথবা টার্নিং উইকেটে খেলা হলে করতে হয়। নিজেদের সুবিধার জন্যই করতে হয়। 

সমকাল: ওয়ানডে দলে হঠাৎ করেই ডাক পেলেন এবং প্রত্যাবর্তনের সিরিজে ভালো খেলেছেন। এই ছন্দ ধরে রাখা কতটা চ্যালেঞ্জিং?
সৌম্য: অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। জাতীয় দলের খেলা সব সময়ই কঠিন। হঠাৎ করে জাতীয় দলে এসে মানিয়ে নেওয়া, ম্যানেজ করা সহজ না। জাতীয় দলে ছিলাম, ইনজুরির কারণে বাইরে চলে গিয়েছি। অনেক দিন বিরতি পড়েছে। একটু কঠিন ছিল মানিয়ে নেওয়া। তবে চেষ্টা ছিল, সুযোগটা কাজে লাগানোর। জানি না কতটুকু পেরেছি, তবে চেষ্টা করেছি। 

সমকাল: ৯১ রানে আউট। সেঞ্চুরি না পাওয়ায় আক্ষেপ আছে?
সৌম্য: সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ তো সবারই থাকে। আমারও আছে। তবে আমি চাইনি, ফ্লো পরিবর্তন করে ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য খেলতে। আমি স্লো হয়ে গেলে ওই সময়ে গেম আরও স্লো হয়ে যেত। একজন নতুন ব্যাটারের চেয়ে সেট ব্যাটারের খেলা সহজ। আমি চাইনি, সেঞ্চুরি পাওয়ার লোভে গেম স্লো করতে। যেভাবে ব্যাট করছিলাম, সেভাবে চালিয়ে যেতে চেয়েছি। দুর্ভাগ্য, আউট হয়ে গিয়েছি। 

সমকাল: শেষ ম্যাচের উইকেট কি ভালো ছিল?
সৌম্য: উইকেট একই রকম ছিল। আমরা দুজন শুরুতে অনেক ভালো ব্যাটিং করেছি। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পেরেছি এবং প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা সম্ভব হয়েছে। 

সমকাল: সাইফ হাসানের সঙ্গে বোঝাপড়া কি ম্যাচের আগে করে নিয়েছিলেন, না খেলতে খেলতে হয়ে গেছে?
সৌম্য: একটা গেম প্ল্যান তো থাকেই। উইকেটে যাওয়ার পর আমরা নিজেদের মতো সেট করে নিয়েছি। আমরা দুজনেই জানতাম, স্পিনাররা বল করবে। কথা বলে নিয়েছিলাম, বাঁহাতি স্পিনার এলে আমি খেলব, ডানহাতি পেলে সাইফ খেলবে। ওই কৌশলের কারণেই কাজ কিছুটা সহজ ছিল। 

সমকাল: সিরিজ শেষে টিম ম্যানেজমেন্ট কোনো বার্তা দিয়েছে?
সৌম্য: কথা হয়েছে, তবে বিশেষ কিছু না। সিরিজ তো এখনও চলছে। সবার ফোকাস ছিল টি২০ সিরিজের দিকে। এ জন্য আলাদা করে তেমন কিছু বলেনি। 

সমকাল: বিপিএল আছে সামনে, ওখানে খেলে টি২০ দলে ফেরার কোনো পরিকল্পনা?
সৌম্য: ওটা তো থাকবেই। বিপিএলে মনোযোগ দিয়ে খেলতে হবে। টুর্নামেন্টে ভালো খেললে সুযোগ আসবে। এখন লাল বলে খেলছি, ফোকাসটা এখানে দিচ্ছি। সাদা বলে খেলে এসে এক দিনের ব্যবধানে লাল বলে খেলাও কঠিন। যদিও খেলোয়াড় হিসেবে কাজ হলো মানিয়ে নেওয়া।

সমকাল: আপনার ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এটা নিয়ে বলবেন, কেন হয় না? 
সৌম্য: জানি না। ওভাবে চিন্তা করিনি। আমি তো ওয়ানডে ক্রিকেটে ধারাবাহিকই ছিলাম। ওয়ানডে ক্রিকেটে মনে হয় না আমি কখনও ও রকম খারাপ খেলেছি। 

সমকাল: আপনি এখন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। এক যুগ হতে চলেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন। টিম ম্যানেজমেন্ট চায় আপনি সেটেল হন। 
সৌম্য: মানুষ চাইলেই ১০-১২ বছর খেলতে পারে না। যেহেতু অভিজ্ঞতা আছে, অবশ্যই দলকে দিতে চাই। আমার দেওয়ার অনেক কিছু আছে। সুযোগ এলে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব।

সমকাল: অনেক সুযোগ পেয়েছেন, কাজে লাগাতে পারেননি। এটা মোটামুটি প্রচলিত কথা। আপনি সহমত, না দ্বিমত করবেন?
সৌম্য: জানি না, ভাই।

সমকাল: একটা সময়ে আপনার বোলিংটা ভালো ছিল। এখন কি ছেড়ে দিয়েছেন?
সৌম্য: অবশ্যই মনোযোগ আছে। যখনই সুযোগ পাই, বোলিং করি। এটা সত্য যে এখন বোলিংয়ে সুযোগ কম থাকে। সুযোগ পেলে লুফে নেব। এক দিন বোলিং করা আর নিয়মিত সুযোগ পাওয়ার মধ্যে একটা বড় পার্থক্য আছে। নিয়মিত বোলিং করার সুযোগ পেলে কাজে লাগাব। 

সমকাল: ব্যাটিংয়ের সময় আপনার পা নড়ে না। এ রকম একটা আলোচনা আছে। 
সৌম্য: ফুটওয়ার্ক একটা যাঁর যাঁর ব্যক্তিগত। বীরেন্দ্র শেবাগের তো পা নড়তই না (হাসি)। শেবাগ কি রান করত না? এটা আসলে কিছুই না, এটি একেকজনের ব্যাটিং স্টাইল। অনেকে অনেক বড় করে খেলে, অনেক ছোট স্টেপে খেলে। কেউ সোজা হয়ে খেলে, কেউ নিচু হয়ে খেলে। এটা খেলার ধরন, আর কিছু না। 

সমকাল: ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের টি২০ বিশ্বকাপে খেলেছেন। আগামী বছর আরেকটি টি২০ আছে। এবার কী লক্ষ্য?

উপরে