ঢাকা, সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫
আপডেট : ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ১৬:৩০

মা আমার মা

অনলাইন ডেস্ক
মা আমার মা

সংসার করা, সংসারে ত্যাগ স্বীকার করা এক কথায় ইনিসাফ প্রতিষ্ঠা করা শিখেছি আম্মার কাছ থেকে। এই শিক্ষা সবসময় সুখের বা সুমধুর ছিলো তা কিন্তু নয়। তিক্ত কথা দিয়েই শুরু করলাম। এক্কেবারে ছোট বেলায় যতদূর মনে পরে আরকি বাড়িতে মাংস আসতো নিয়ম করে। এখনকার মতো খাদ্যাভ্যাস ছিলো না সমাজে। টাকা থাকলেও প্রতিদিন মুরগী বা গরুর গোস্তো জুটতো না কপালে। সপ্তাহান্তে গোস্তো রান্না হইতো। সেই দিন টা শুক্রবার ই হইতো।  সেই গোস্তো সবার জন্য বরাদ্দ থাকতো এমনকি বাড়ির সাহায্যকারী ও বাদ পরতো না।  আম্মার উপর রাগ হইতো তখন সব্বাইকে দেয়ার কি আছে তাও আবার সুসম বন্টন  গাল ফুলালেও বলার সাহস ছিলো না। আরো নিয়ম ছিলো  বাহারি রান্না মানে অনেক পদের রান্না হইতো দুই কারনে ১) উতসবে পারবনে, ২) বাড়িতে মেহমান আসলে। আমরা ছোটরা বেশ খুশি হইতাম মেহমান আসলে।  ভালো খাবার জূটতো কপালে সেই সাথে নিত্তদিনের রুটিন,  শাসন ও একটু আলগা হইতো। আমার এক্কেবারে ছোটবেলা পার হইছে বিওএফ এ তার পর বহু শহর বহু স্কুল এ রিজিক লেখা ছিলো।

কচুক্ষেত কাফরুল এলাকা যারা চিনেন তারা জানেন ৯০ এর দশকে মাউন্ট হারম্যান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ছিলো টিভিতে এড দিতো এই স্কুলের  আম্মাকে বলছি ভর্তি করে দিতে  ফলাফল ধমক খেয়েছি। ওই স্কুলের কথা বলার আরেকটা কারন আব্বার কলিগের।মেয়ে পড়তো। আব্বার ইনকাম কম ছিলো না আম্মা সেই বাচ্চা কালেই বুঝায় দিসিলো ঘরে যে টাকা তা একলা তোমাদের না।  এই ইনকামে সমাজ সংসার আত্মীয় অনেকের হক আছে। নিজের চাহিদার লাগাম টানতে শিখিয়েছিলেন তিনি। অনেক দামি জামা দেননি কখনোই। সুন্দর ডিজাইন দিয়ে বানিয়ে দিতেন নিজের হাতে। কতো আক্ষেপ ছিলো রেডিমেড জামা পরার। বাড়ির পাশে ছোট একটা হেফজ খানা আম্মার রান্নার পরিধি আরেকটু বারলো গ্রামের বাড়ি গেলে ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে যাওয়া হয়  আম্মা নিজের হাতে মাটির চুলায় গরুর গোস্তো রাধেন বাতাসে মনমাতানো সুবাস ঘুরে বেড়ায়, নাকে এসে লাগে।  ছোট ছোট বাচ্চারা আসে সারিধরে বসে খায়।  আম্মা তৃপ্তির  ঢেকুর তোলেন। আম্মার কিডনি নষ্ট হইলো ডায়ালাইসিস শুরু হইলো মিষ্টি সময় গুলো ধুসর হয়ে গেলো আম্মাকে নিয়ে টানাটানি বাসা হাসপাতাল বাসা আমার ছোট বাচ্চা  এই কঠিন সময়ে অবাক হয়ে দেখলাম যে সকল মানুষের জন্য আম্মা অকাতরে শ্রম দিয়েছেন সারা জীবন তারা সবাই নিজের সংসার নিয়ে অতি ব্যাস্ত।  দম ফেলার।সুয৬নেই তাদের। কিন্তু এই সফর একলার ছিলো না অনেক কে পাশে পেয়েছিলাম। আল্লাহ ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন। বুঝলাম লেনদেন টা কোন মানুষের সাথে না আল্লাহর সাথে। আম্মা নেই ১১ বছর আমাদের বলা কথা আল্লাহ দুয়া হিসেবে কবুল করুন।

লেখক-  মাহমুদা মমিন

উপরে